img

করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে ব্যাংকসেবায় মনোযোগ বাড়াতে কর্মকর্তাদের জন্য প্রণোদনা ও স্বাস্থ্যবিমা চালু করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এপ্রিল ও মে মাসে যাঁরা শাখায় গিয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁরা এ সুবিধা পেয়েছেন। ওই সময়ে অল্প কিছু শাখা খোলা ছিল। এখন করোনাভাইরাসের তীব্রতা বেড়েছে। ব্যাংকের সব শাখাও খুলে গেছে। আর বাতিল হয়ে গেছে প্রণোদনা ভাতা ও বিমা-সুবিধা।

প্রণোদনার রেশ কাটতে না কাটতে ব্যাংক খাতে এখন নতুন করে যুক্ত হয়েছে বেতন কমানো ও ছাঁটাই-আতঙ্ক, যা এখন সব শ্রেণির ব্যাংকারের মধ্যে প্রধান আলোচনার বিষয়। এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করেছেন ব্যাংকাররা। তাঁরা বলছেন, এপ্রিল থেকে সব ঋণে সুদ ৯ শতাংশ করায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ও রিটেইল ঋণনির্ভর ব্যাংকগুলো সমস্যায় পড়ে গেছে। এসব ঋণ দেওয়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এসব ঋণের সঙ্গে জড়িতদের চাকরিও ঝুঁকিতে পড়েছে। অনেক ব্যাংক এরই মধ্যে কর্মী ছাঁটাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।

করোনার কারণে ব্যাংক খাতে ঋণ আদায় বর্তমানে বলতে গেলে বন্ধ। ব্যাংকে সুদ কমে যাওয়ায় ও মানুষের আয় কমায় অনেকে সঞ্চয়ের টাকা তথা আমানত তুলে নিচ্ছেন। আবার করোনায় দায়িত্ব পালনের জন্য বিশেষ প্রণোদনা দেওয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিদ্ধান্তের কারণেও ব্যাংকগুলোর খরচ বেড়ে গেছে।

ব্যাংক পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতেই এক্সিম ব্যাংক বেতন কমিয়ে দেয়। ব্যাংকারদের বেতন-ভাতা কমানোর কথা বললেও ব্যাংক পরিচালকদের লভ্যাংশ, সভায় অংশগ্রহণের ফি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা কমানোর বিষয়েও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

এমন পরিস্থিতি তৈরির জন্য সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংককে দায়ী করেছেন ব্যাংকাররা, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিএবির একটি চিঠি

বিএবির চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার এ নিয়ে বলেন, ‘লভ্যাংশ কমানো কোনো সমাধান না। কারণ, ব্যাংকের ৭০ শতাংশ শেয়ার সাধারণ শেয়ারধারীদের কাছে। তাই সব খরচ কমিয়ে টিকে থাকতে হবে।’

জানা গেছে, আয়ের দিক থেকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আরও বেশি চাপে পড়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স কর্মীর সংখ্যা কমিয়েছে। লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খাজা শাহারিয়ার এ নিয়ে বলেন, ‘গত বছর থেকেই আমরা সমস্যার মধ্যে আছি। ব্যাংকের সুদহার নির্দিষ্ট ও করোনার কারণে সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। কোনো ঋণ আদায় হচ্ছে না, আমানতও সেভাবে পাওয়া যাচ্ছে না। এরপরও আমরা কোনো কর্মী ছাঁটাই করছি না। যাঁরা বাদ পড়ছেন, তাঁরা ২০১৯ সালে লক্ষ্য পূরণ করতে পারেননি।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান ও ইস্টার্ণ ব্যাংকের এমডি আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ‘ব্যাংকের কর্মীদের বেতন-ভাতা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনই নয়। যদি এ ব্যাপারে কিছু করতেই হয়, আমাদের অপেক্ষা করতে হবে পুরো বছর পার হওয়া পর্যন্ত। পুরো বছর শেষে কোন ব্যাংক শেষ পর্যন্ত কী করল, এটা দেখে পর্ষদ যদি মনে করে কমাতে হবে, তখনই সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’

জিরোআওয়ার২৪/এমএ 

এই বিভাগের আরও খবর