img

একজন সুস্থ মানুষের রক্তে অক্সিজেনের স্বাভাবিক ঘনত্ব থাকে ৯৫ শতাংশ বা তার বেশি। এর চেয়ে কমে গেলে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি আছে বলে ধরা হয়, যাকে ‘হাইপক্সিয়া’ বলে। অক্সিজেনের ঘনত্ব ৯০ শতাংশের কম হলে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত অনেক রোগীরই শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। এটি এ রোগের অন্যতম একটি জটিলতা।

তবে কখনো কখনো রক্তে অক্সিজেনের ঘনত্ব মাত্রাতিরিক্ত কমে গেলেও রোগী টের পান না। একে বলে ‘নীরব অক্সিজেনের ঘাটতি’। রোগীর রক্তে অক্সিজেনের ঘনত্ব এবং সে অনুযায়ী তাঁর উপসর্গের মধ্যে অসামঞ্জস্যতার কারণে এমনটা হয়। এ সমস্যায় প্রাথমিক পর্যায়ে রোগী কিছু বুঝতে বা সমস্যা অনুভব না করলেও হঠাৎ করেই দ্রুত অবস্থার অবনতি ঘটতে পারে।

করোনা রোগীর আরেকটা নীরব বিপদ হলো, রক্তনালিগুলোয় রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা। যদি ফুসফুসের রক্তনালিগুলোয় রক্ত জমাট বাঁধতে শুরু করে, তাহলেও অক্সিজেনের ঘনত্ব কমতে থাকে। মস্তিষ্ক, কিডনিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যেতে শুরু করে। করোনা হলে এই দুটি নীরব বিপদ থেকে খুবই সাবধান থাকতে হবে।

করোনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পর ৫ থেকে ১০ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়টা বেশ সতর্ক থাকতে হবে। সুযোগ থাকলে বাড়িতে রোগীর অক্সিজেনের ঘনত্ব মনিটরিং করতে হবে এবং টেলিফোনে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। বাড়িতে ‘পালস অক্সিমিটার’ নামক ছোট একটি যন্ত্রের সাহায্যে শরীরের অক্সিজেনের ঘনত্ব পর্যবেক্ষণ করা যায়।

যাঁরা উপসর্গহীন বা মৃদু উপসর্গ রয়েছে, তাঁরাও বাড়িতে পালস অক্সিমিটার যন্ত্রের  সাহায্যে দিনে বেশ কয়েকবার অক্সিজেনের ঘনত্ব পর্যবেক্ষণ করবেন। সামান্য পরিশ্রমে বা হাঁটাহাঁটিতে হয়রান লাগছে কি না, লক্ষ করুন। এটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত।

আপাতদৃষ্টে শ্বাসকষ্ট না থাকলেও যদি শরীরে অক্সিজেনের ঘনত্ব ৯৩ শতাংশ বা তার কম থাকে, তাহলে দ্রুত হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

পেটের ওপর ভর দিয়ে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকলে শরীরে অক্সিজেনের ঘনত্ব বেশ খানিকটা বাড়ে। এটি খুব কার্যকর একটি প্রাথমিক চিকিৎসা। পালস অক্সিমিটারে বাড়িতে অক্সিজেনের ঘনত্ব ৯৫ শতাংশের নিচে নামলেই এ কাজটি করুন। তবে অক্সিজেনের ঘনত্ব কম দেখে আতঙ্কিত হলে চলবে না। মনোবল শক্ত রাখতে হবে।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ 

এই বিভাগের আরও খবর