img

করোনা মহামারির সার্বক্ষণিক তথ্য প্রকাশ করছে ওয়ার্ল্ডোমিটারস ডট ইনফো। এই ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, গতকাল রোববার বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল ৬২ লাখ ১৮ হাজারের বেশি। এর মধ্যে মারা গেছেন ৩ লাখ ৭২ হাজারের বেশি। সুস্থ হয়ে উঠেছেন প্রায় ২৭ লাখ ৭৭ হাজার।

চীনের পর করোনাভাইরাসের মহামারির উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল ইউরোপ। এরপর এই মহামারি ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে আমেরিকায়। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকায় সংক্রমণ ও মৃত্যু এখনো থামেনি। এর মধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। বিশেষ করে ভারতে এখন প্রায় প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। মৃত্যুও ৫ হাজার ছাড়িয়েছে দেশটিতে।

এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়াসহ ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্যমতে, গতকাল রাত পর্যন্ত ভারতে করোনায় সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে মোট ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৫ হাজার ৪০৬ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯১ হাজারের বেশি করোনা সংক্রমিত রোগী।

সংক্রমিত রোগীর সংখ্যার দিক থেকে ভারত এখন বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অষ্টম। গতকাল দেশটি রোগীর সংখ্যায় জার্মানিকে ছাড়িয়ে যায়। মৃত্যুর সংখ্যায় ভারত ১৩তম অবস্থানে রয়েছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্যমতে, ভারতে এ পর্যন্ত ৩৭ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। মোট জনসংখ্যার হিসাবে এ হার দাঁড়ায় প্রতি ১০ লাখ জনগোষ্ঠীতে ২ হাজার ৭১০টি।

ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৩০ জানুয়ারি। এই মহামারিতে প্রথম মৃত্যু দেখে দেশটি গত ১২ মার্চ। এর দুই সপ্তাহের মাথায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ২১ দিনের জন্য পুরো দেশ লকডাউন করে। তারপরও সংক্রমণ থেমে থাকেনি। তবে সংক্রমণ বৃদ্ধি ও মৃত্যুর হার ছিল ধীর। কিন্তু দফায় দফায় লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি বিধিনিষেধ শিথিল করা শুরু হওয়ার পর থেকেই দেশটিতে করোনার সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করে। সর্বশেষ গত শনিবার লকডাউনের মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত পঞ্চম দফায় বাড়ায় সরকার। তবে এ সময় রাত্রিকালীন কারফিউর সময়সীমা সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত ছিল। তা কমিয়ে রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত করা হয়েছে। তাও এই লকডাউন পুরোপুরি কার্যকর থাকবে করোনা সংক্রমিত লাল চিহ্নিত এলাকাগুলোয়। বাকি এলাকাগুলোয় জনজীবন মোটামুটি স্বাভাবিকই থাকবে।

এদিকে ভারতে দৈনিক রোগী শনাক্ত হওয়ার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছেই। গত মে মাসের প্রথম দিনই ভারতে রোগী শনাক্ত হওয়ার দৈনিক সংখ্যা ২ হাজার ছাড়ায়। তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই আগের দিনের চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। সর্বশেষ গত শুক্রবার থেকে গতকাল পর্যন্ত টানা তিন দিন ধরে ৮ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছেন দেশটিতে। গত শুক্রবার শনাক্ত হন ৮ হাজার ১০৫ জন ও শনিবার শনাক্ত হন ৮ হাজার ৩৩৬ জন। আর গতকাল রাত পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৮ হাজার ৭০৯ জন যা এক দিনে সবচেয়ে বেশি।

শুধু সংক্রমণই নয়, মৃত্যুও বাড়ছে ভারতে। গতকাল শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় ২২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগের দিন শনিবার মারা গেছেন ২০৫ জন। এক দিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে গত শুক্রবার, ২৬৯ জন। এদিনের হিসাব বাদ দিলে মে মাসের প্রথম থেকে ভারতে প্রায় প্রতিদিনই করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনকে ছাড়িয়ে গেছে।

রোগী ও মৃত্যু বাড়ছে পাকিস্তানেও। গতকাল এক দিনে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩৯ জন রোগী শনাক্ত ও ৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মিলে রোগী প্রায় ৭০ হাজার আর মৃত্যু দেড় হাজারের মতো।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ   

এই বিভাগের আরও খবর