img

চার দিন ধরে অচল রয়েছে কলকাতা। এখনো শহরের অধিকাংশ স্থানে ফিরে আসেনি বিদ্যুৎ, পানি। চালু হয়নি ফোন ও ইন্টারনেট। মানুষ ডুবে আছে অন্ধকারে। পাশাপাশি আলো ও বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে আম্পান বিধ্বস্ত পশ্চিমবঙ্গের ৬টি জেলা। হাজার হাজার গাছ ভেঙে পড়ায় কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। বিদ্যুতের খুঁটি আর মোবাইলের টাওয়ার ভেঙে পড়ায় বন্ধ হয়ে গেছে অধিকাংশ এলাকার মোবাইল ও নেট পরিষেবা।

এদিকে চার দিনেও কলকাতায় স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না আসায় এবার পশ্চিমবঙ্গ সরকার আজ এক টুইট বার্তায় সেনাবাহিনীর সাহায্য চেয়েছে। অনুরোধ করেছে সেনা নামানোর। পাশাপাশি রেল দপ্তরেরও সাহায্য চেয়েছে।

কলকাতাসহ রাজ্যের আম্পান বিধ্বস্ত বহু এলাকা এখনো পানির নিচে ডুবে আছে। চলছে উদ্ধার কাজ। কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটার জন্য ১০০টি দলকে নিয়োগ করা হলেও সেভাবে কাটা যাচ্ছে না ভেঙে পড়া গাছ।

আজও কলকাতায় পানি এবং বিদ্যুতের দাবিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকালে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। দিকে দিকে দাবি উঠেছে পানি চাই, বিদ্যুৎ চাই। আজ কলকাতার গড়িয়া, গরফা, বাঘাযতীন, বেহালা, সুলেখা মোড়, কসবা, বাঁশদ্রোণী, সাঁপুইপাড়া, যাদবপুর, বিজয়গড় এবং কলকাতার বাইরের খড়দা, সোনারপুর, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েসহ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় পানি ও বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে, গাছ ফেলে, সড়ক আটকিয়ে অবরোধে শামিল হয়।

এদিকে রাজ্য সরকারের অনুরোধে পশ্চিমবঙ্গে আরও ১০টি দল আসছে জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী বা এনডিআরএফ। ৬টি জেলায় তারা কাজ করবে। ফলে মোট এই উদ্ধার কাজে অংশ নেবে ৩৬টি এনডিআরএফ-এর দল। যদিও ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছে এনডিআরএফ দল।

এদিকে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে এক আম্পান নিয়ে এক পর্যালোচনা বৈঠকে যোগ দিয়ে বলেছেন, আম্পান দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১০ লাখ বাড়ি ভেঙেছে। ভেঙেছে সুন্দরবন অঞ্চলের ৫৬ কিমি নদী বাঁধ। এই বাংলায় ৬ কোটি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ১ লাখ কোটির সম্পদ ক্ষতি হয়েছে। আর শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৭৩ লাখ মানুষ। মমতা অবিলম্বে রাজ্যে বিদ্যুৎ এবং পানীয় জলের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য নির্দেশ দেন। বলেন, গ্রামে ১৫০টি জেনারেটর ভাড়া করে সেখানে বিদ্যুৎ ও পানির ব্যবস্থা করা হোক।

এদিকে আজ দুপুরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ আম্পান বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের জন্য দক্ষিণ কলকাতার গড়িয়ার দিকে রওনা হলে পথিমধ্যে গড়িয়ার ঢালাই ব্রিজের কাছে তার গাড়ি আটকায় পুলিশ। পুলিশের দাবি লকডাউনের মাঝে তিনি বিনা অনুমতিতে এলাকায় যাচ্ছিলেন। পুলিশ তাই তার গাড়ি আটকায়। এ সময় তৃণমূলের সমর্থকেরা ওই এলাকায় আসে। একপর্যায়ে বিজেপি এবং তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে দিলীপ ঘোষ পায়ে হেঁটে বিধ্বস্ত এলাকায় যেতে চাইলে বাধা দেয় পুলিশ।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ   

এই বিভাগের আরও খবর