img

বৈশ্বিকভাবে মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ১০ শতাংশ পর্যটন খাতের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমাদের দেশে পর্যটন খাত ততটা উন্নত না হলেও এর সঙ্গে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান জড়িত। যেমন টোয়াবের প্রায় ৭০০ সদস্য রয়েছেন। এর বাইরে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বার, বিমান, নৌ ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবসায়ের বড় অংশ আমাদের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এসব বিবেচনায় পর্যটন খাতের সঙ্গে সব মিলিয়ে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ সরাসরি জড়িত বলা যায়।

বর্তমানে আমাদের দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) পর্যটন খাতের অবদান ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। করোনাভাইরাসের কারণে সবার আগে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আর সম্ভবত পর্যটন খাতের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সবচেয়ে বেশি সময় লাগবে।

লকডাউন উঠে গেলে গাড়ি, বিমান চলাচল শুরু হবে, কিন্তু আমাদের পর্যটন খাত চালু হতে অনেক সময় লাগবে। কারণ করোনোর প্রভাবে আর্থিকভাবে অনেকেই ক্ষতিতে পড়বেন। আর্থিক সচ্ছলতা, সময় ও পরিবেশ তৈরি হলেই মানুষ ঘুরতে বের হবে। অর্থাৎ পর্যটন খাত স্বাভাবিক হতে বেশ সময় লাগবে।

সরকার ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন খাতকে সহায়তা করতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, যাতে তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারে। এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ। তবে যাঁদের স্থায়ী বিনিয়োগ আছে, যেমন হোটেল, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি, শুধু তাঁরাই এ সুবিধা পাবেন। কিন্তু পর্যটন খাতের সঙ্গে ডিঙির মাঝি থেকে শুরু করে পাহাড়ের গাইডও জড়িত। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা সবাই বেকার হয়ে পড়েছেন। সে জন্য অনেকেই বিকল্প পেশার চিন্তা করছেন, যদিও এখন বিকল্প কোনো কাজও নেই।

পর্যটন খাতের সঙ্গে জড়িত সবার অফিস খরচ আছে। এর ওপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবাইকে ছাড় দিয়ে সেবা দিতে হবে। হোটেল ও গাড়ি ভাড়া কমিয়ে আনতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, কিছুদিনের জন্য হলেও কর ছাড় দিতে হবে। কারণ যে ক্ষতি হয়েছে তা ১-২ বছরে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। যেহেতু পর্যটন মৌলিক চাহিদার মধ্যে পড়ে না এবং সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার অনেক পরে মানুষ ভ্রমণে বের হবে, সেহেতু পর্যটন খাতকে টিকিয়ে রাখতে আমরা সবার সহায়তা চাই। আমাদের মাথায় রাখতে হবে, বড় একটা জনগোষ্ঠী এ খাতের সঙ্গে জড়িত। কম সুদ যে ঋণ প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের ছাড় দিতে হবে। কারণ পর্যটন খাতে সবার জামানত দিয়ে ঋণ নেওয়ার পরিস্থিতি নেই। সে ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা দেখে ঋণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। কমপক্ষে ছয় মাস চলার জন্য সহজ শর্তে চলতি মূলধন হিসেবে ঋণ পেলে এই খাত আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

আমাদের নিজেদেরও নতুন নতুন পর্যটনকেন্দ্র খুঁজে বের করতে হবে, যাতে সুন্দরবন এবং বান্দরবনের বাইরে মানুষ বেড়াতে যাওয়ার সুযোগ পায়। পাশাপাশি খরচও কমিয়ে আনতে হবে। এতে পর্যটন খাতকে নতুন করে দাঁড় করানো সম্ভব।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ   

এই বিভাগের আরও খবর