img

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৫ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন থেকে ৮ দশমিক ৮ ট্রিলিয়ন কোটি মার্কিন ডলারে দাঁড়াতে পারে। অর্থাৎ করোনায় ক্ষতির অঙ্ক হতে পারে ৫ লাখ ৮০ হাজার কোটি থেকে ৮ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার (এক ট্রিলিয়নে এক লাখ কোটি) । আর এই ক্ষতি বৈশ্বিক জিডিপির (মোট দেশজ উৎপাদন) ৬ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ৯ দশমিক ৭ শতাংশ হবে।

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আজ শুক্রবার বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে প্রকাশিত 'পটেনশিয়াল ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট অব কোভিড– ১৯' বা 'কোভিড–১৯ এর সম্ভাব্য অর্থনৈতিক ক্ষতি' শীর্ষক এক প্রতিবেদনে নতুন করে এই পূর্বাভাস দিয়েছে। সংস্থাটি এবারের পূর্বাভাসে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে করোনাজনিত ক্ষতির পরিমাণ এপ্রিলে প্রকাশিত 'বিশ্ব অর্থনৈতিক পূর্বাভাস' প্রতিবেদনের তুলনায় দ্বিগুণ প্রাক্কলন করেছে।

এডিবির মতে, দক্ষিণ এশিয়ার মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) করোনাজনিত ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ১৪ হাজার ২০০ কোটি থেকে ২১ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের মতো। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশে করোনা মোকাবিলায় কঠোর বিধিনিষেধের কারণে সার্বিকভাবে এবার দক্ষিণ এশিয়ার জিডিপি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ কমবে।

সংস্থাটি জানায়, করোনার উৎপত্তিস্থল চীনের অর্থনৈতিক ক্ষতি দাঁড়াবে ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন থেকে ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ১০ হাজার কোটি থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি ডলার।

আর এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এই আর্থিক ক্ষতি দাঁড়াবে ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন থেকে ২ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন।

বিশ্বব্যাপী কোভিড–১৯ বা করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরিস্থিতিতে এসব পূর্বাভাস দিল এডিবি। করোনাভাইরাস বিশ্ব অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে প্রায় পঙ্গু করে দিচ্ছে। সে জন্য করোনার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতি চাঙ্গা করে তুলতে সর্বাত্মক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ ইয়াসুয়াকি সাওয়াদা বলেন, 'নতুন পূর্বাভাস থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে কোভিড–১৯ বা করোনাভাইরাসের ভয়াবহ প্রভাবের একটি চিত্র উঠে এসেছে।' করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নীতি–সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা জোরালো হয়ে ওঠার যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো এরই মধ্যে ব্যাপকহারে সুদের কমানোসহ আর্থিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব পড়ার প্রমাণ পাওয়া যায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্বের তথ্যে। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে গত সপ্তাহে বেকার ভাতা চেয়ে নতুন আবেদন করেছেন ৩০ লাখ লোক, যা এ পর্যন্ত মোট আবেদনের চার ভাগের এক ভাগ।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোমে পাওয়েল তাঁর দেশকে এই বলে সতর্ক করে দেন যে প্রাথমিক ধারণার চেয়ে ধীরগতিতে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলবে। তিনি বলেন, সরকারের অধিক ত্রাণ তৎপরতা না থাকায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে যুক্তরাষ্ট্র ধীর ও বেদনাদায়ক পরিস্থিতিতে রয়েছে।

একই সময়ে অবশ্য যুক্তরাজ্য করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় অর্থ বরাদ্দ বাড়িয়ে ১২ হাজার ৩২০ কোটি ডলারে উন্নীত করেছে।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ   

এই বিভাগের আরও খবর