img

বাইরের করোনাবন্দী পৃথিবী থেকে ঘরে নিরাপদে থেকে পরিবর্তন হচ্ছে সম্পর্কের অনুষঙ্গগুলো। কখনো মানসিক চাপের কারণে খিটখিটে মেজাজ আর সহনশীলতা কমে যাওয়ায় পারিবারিক দ্বন্দ্ব–সংঘাত বাড়ছে, আবার কখনো সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। আগেকার ফাটল ধরা সম্পর্কগুলো ঝালাই হচ্ছে কখনো কখনো।

বিশেষজ্ঞদের মতে, লকডাউনে ঘরে থাকতে থাকতে মানুষের মানসিক চাপ বাড়ছে। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, আতঙ্ক বা প্যানিক, মানিয়ে চলার সমস্যা (অ্যাডজাস্টমেন্ট ডিজঅর্ডার), বিষণ্নতা, অ্যাকিউট স্ট্রেসসহ নানা রকম মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন অনেকেই। যাদের আগে থেকেই কোনো মানসিক রোগ ছিল, তারা সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের মধ্যে সংক্রমণের ভয়, মৃত্যুভয়, জীবন–জীবিকা নিয়ে অনিশ্চয়তায় বাড়ছে মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি।

তাই ঘরে থাকা এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে দ্বন্দ্ব আর সংঘাতের বদলে পারিবারিক সম্পর্কগুলোকে আরও দৃঢ় আর মধুর করে তোলা যায়। এ জন্য যা যা করা যেতে পারে—

* ঘরকে বন্দিদশা মনে না করে উপভোগ করার চেষ্টা করুন। এতে আপনার মানসিক চাপ কিছুটা কমবে। আপনার সহ্যক্ষমতা বাড়বে।

* সবাই মিলে একসঙ্গে করোনাকে পরাজিত করতে হবে, এমন ভাবুন। ছোটখাটো তর্ক–বিতর্ক এড়িয়ে চলুন।

* মানুষ হিসেবে আপনার পরিচয়ের অন্যতম সূচক হচ্ছে আপনি অপরকে সম্মান করছেন কি না। তাই পরিবারের অন্যান্য সদস্য, বিশেষ করে নারীদের প্রতি আপনার সম্মান জানানোর এটাই উপযুক্ত সময়।

* যে পরিবারে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই কাজ করতেন, করোনাকালের পরস্পরকে গুণগত সময় দেওয়ার সুযোগ এসেছে। একে অপরকে নতুন করে চিনতে শিখুন। সময়টাকে কাজে লাগান।

* নিজেকে প্রতিদিন নিয়ম করে কিছুটা সময় দিন। নিজেকে যত চিনতে পারবেন, তত অপরের প্রতি আপনার অনুভূতিগুলো প্রখর হবে।

* পরিবারের নারী–পুরুষ, ছোট–বড় সবাই ঘরের কাজে, যাঁর যাঁর সামর্থ্যমতো অংশ নিন। এতে কাজগুলো করাকালীন চাপমুক্ত থাকবেন, একজনের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে না এবং এভাবে একটি টিম তৈরি হলে পরস্পরের সম্পর্কগুলো মজবুত হবে।

* আপনার জীবনসঙ্গী যিনি আছেন, তাঁকেও তার মতো করে কিছুটা নিজস্ব সময় দিন। তিনি যেন নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারেন সে সুযোগ দিন।

* পরিবারের মধ্যে একে অপরকে প্রশংসা করার চর্চা রাখুন। সারাক্ষণ অভিযোগ করেবেন না। ‘ঘর কেন নোংরা করলে’, ‘এটা কেন ওখানে রাখলে’ এমন বাক্য ব্যবহার না করে প্রশংসা করুন।

* সবাই যেকোনো বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন। ছোট-বড় সবার মতামত নিন।স্মার্টফোনে বেশি সময় না দিয়ে নিজেদের সময় দিন।

* পরিবারের সবাই মিলে সর্বসম্মত একটি রুটিন মেনে চলুন। কখন ঘুমাবেন, কখন উঠবেন, কখন খাবেন, কখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকবেন, কখন পারিবারিক সময় কাটাবেন, সেগুলোর একটা অলিখিত নিয়ম তৈরি করুন।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ   

এই বিভাগের আরও খবর