img

বদলে গেছে ঢাকা। সবুজে সবুজে ভরে উঠেছে চারপাশ। মানুষের আনাগোনা ও যানবাহনের চলাচল নেই। তাই নেই দূষণও। এখন আর বাতাসে শুনতে হয়না কর্কশ হর্ণের শব্দ। রাস্তার ধার এহয় না ময়লায় স্তুপ। বলা চলে, মানুষ ঘরে থাকতে শুরু করায়, বেড়িয়ে এসেছে প্রকৃতির রূপ।

সবুজ প্রকৃতি মহানগরী ঢাকার চারদিকে শোভা পাচ্ছে। কোথাও দেখা যায় না ধুলাবালি। সড়কের দুই পাশের গাছে কচি পাতা চোখ মেলেছে। বাতাসে সেসব পাতা চুলের মতো তির তির করে উড়ছে। কোথাও কোথাও কুঁড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছে ফুল। কোনোটি লাল, কোনোটি হলুদ আবার কোনোটি বেগুনি। অন্যরকম এক আবেশ ছড়াচ্ছে বর্তমান রাজধানীর প্রকৃতি। কী সবুজ ঢাকার বর্তমান পরিবেশ! ভাবাই যায় না! কী সুন্দর সবুজ হয়ে আছে নতুন পাতা ও ফুলে গাছ-গাছালি! রং-বেরঙের প্রজাপতিও উড়ছে!

করোনা প্রাদুর্ভাবে দেশ। সাধারণ ছুটির নোটিস ঝুলছে অফিস-আদালত এবং শিল্প-কারখানায়। বন্ধ গণপরিবহনের চাকাও। ঝাপ উঠছে না দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের। সীমিত আকারে খোলা থাকছে ব্যাংকসহ সেবা সংক্রান্ত দফতর, হোটেল ও ওষুধের দোকান। মুদি ও শপিং মলগুলো সীমিত সময়ের জন্য খোলা থাকছে। সরকারি ঘোষণার মাধ্যমে ঘর থেকে সাধারণ জনগণকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। সেই সুযোগে সবুজ প্রকৃতি প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিচ্ছে।

গত ২৬ মার্চ শুরু হওয়া এ পরিস্থিতি নতুন কোনো ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আপাতত চলবে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত। টানা এক মাসের ছুটিতে থাকছে গোটা দেশ। গণপরিবহন আর জনশূন্য ঢাকা এখন আর দূষণের নগরী নয়। নেই গাড়ির কালো ধোঁয়া। বাতাসে নেই ভারী সিসা। মেট্র্রো রেলের উন্নয়ন কাজ বন্ধ। ধুলাও নেই বলে উড়ছে না। ফুরফুরে বাতাসে তরতর করে বেড়ে উঠছে সড়কদ্বীপের গাছ-গাছালি। পথ বিভাজনে সংসারপাতা ফুলগুলো। সারা বছরের ধূসরতা কেটে গেছে কয়েক দিনেই। আপন রূপে ফিরছে শোভা বৃদ্ধির জন্য লাগানো লতাগুল্ম। এ ছাড়া রমনা পার্ক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের গাছ-গাছালি এখন সবুজে ভরে গেছে।

ঢাকার পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত এক কর্মী বলেন, রাস্তায় এখন দম নিয়ে শান্তি পাই। ধুলাবালি একেবারে নাই। পেট্রল পোড়া গন্ধ নাই। সেখানে সেখানে কফ থুতু পড়ে থাকছে না। খুব হালকা একটা পরিবেশ।

আরেকজন বলেন, আমি গাছে পানি দেই। এখন গাছগুলো দেখলে মন ভরে যায়। পাতার উপর ধূলার পরত নেই। শুকনো পাতা ছাড়া আগের মতো ময়লা জমে থাকে না গাছের গোড়ায়। অন্য সময় এতটা সবুজ দেখা যায় না গাছগুলা। 

ফাঁকা ঢাকায় দু-একটি ছোট ট্রাক ও পিকআপ চলছে। সিএনজি অটোরিকশাও দেখা গেল দু-একটি। কোনোটায় যাত্রী আছে, কোনোটা খালি। কোন রকম ট্রাফিক জ্যাম ছাড়াই এগুলো চলছে। ট্রাফিক পুলিশ রানা জানান, গত ২০ বছর ধরে ঢাকায় থাকি। চাকরির বয়স আট বছর। আগে ধূলার জন্য চোখে কিছু দেখা যেত না। আর এখন সব সবুজ আর সতেজ। শব্দ দূষণও কান ঝালাপালা করে না আমার। আমি চাই করোনা শেষ হোক, তবে ঢাকা এমনই থাকুক।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ 

এই বিভাগের আরও খবর