করোনায় ১ কোটি মানুষের দারিদ্রতার আশঙ্কা
করোনাভাইরাসের বিরূপ প্রভাব পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতিতে। অর্থনৈতিক স্থবিরতায় চীনের প্রবৃদ্ধি থমকে যেতে পারে। এর প্রভাব পূর্ব এশিয়ার ১ কোটির বেশি মানুষকে দারিদ্র্যের দিকে ঠেলে দেবে। গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এমন সতর্কবার্তাই দেয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মুখ্য অর্থনীতিবিদ আদিত্য মাত্তু বলেন, ‘করোনা অভূতপূর্ব বৈশ্বিক ধাক্কা দিয়েছে, যার প্রভাবে প্রবৃদ্ধি থমকে যেতে পারে এবং এই অঞ্চলজুড়ে দারিদ্র্য ছড়িয়ে দিতে পারে।’
মহামারির প্রভাব নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পরিস্থিতি ভয়াবহ খারাপ না হলেও এই অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি ব্যাপক হারে কমবে। ২০১৯ সালের ৬ দশমিক ১ শতাংশ থেকে চীনের অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ কমে হবে ২ দশমিক ৩ শতাংশ। মহামারি মোকাবিলায় বিশ্বের দুই-পঞ্চমাংশ মানুষ এখন লকডাউন হয়ে আছে। এর কারণে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য, যাতায়াতব্যবস্থা থমকে গেছে। যেসব দেশে এই ভাইরাস ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে, সেসব দেশে হয়তো মন্দা আসবে না, তবে প্রবৃদ্ধি একদম তলানিতে নেমে যাবে।
মাত্র দুই মাস আগে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছিল, চলতি বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ, যা কিনা ১৯৯০ সালের পর সর্বনিম্ন প্রবৃদ্ধি। দুই মাসের মধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি মারাত্মক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো আছে, চীনকে বাদ দিয়ে পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি কমে ১ দশমিক ৩ শতাংশে নেমে আসতে পারে। সর্বোচ্চ আশা করলে ২ দশমিক ৮ শতাংশ। গত বছর যা ছিল ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। এমনিতেই গত বছর যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্যযুদ্ধ এ অঞ্চলে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
মাত্তু বলছেন, এই অঞ্চলের ১৭টি দেশ বৈশ্বিক অর্থনীতির অন্যতম চাবিকাঠি এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ৭০ ভাগ নির্ভর করে এই দেশগুলোর ওপর। এখন সবচেয়ে বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এই অঞ্চলের মানুষ। এই পারস্পরিক নির্ভরশীল বিশ্বে যেখানে আমাদের অর্থনৈতিক ভাগ্য একে অপরের ওপর নির্ভরশীল, সেখানে এই ধাক্কা সব উল্লেখযোগ্য অর্থনীতিতেই আঘাত হানবে।
জিরোআওয়ার২৪/এমএ