img

ছোলার আছে নানা গুণ। কাঁচা, সেদ্ধ কিংবা রান্না করা, সব ভাবেই ছোলা আমাদের শরীরে জন্য উপকারী। মাত্র ১০০ গ্রাম ছোলা, আমাদের শরীরে সরবরাহ করে প্রায় ১৮ গ্রাম আমিষ, ৬৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৫ গ্রাম ফ্যাট, ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ১৯২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ‘এ’ এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১ ও বি-২।  

ছোলা মূলত ডাল হিসেবেই খাওয়া হয়। এই ডালে থাকে মলিবেডনাম এবং ম্যাঙ্গানিজ। আছে প্রচুর পরিমাণে ফলেট, খাদ্য আঁশ, আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার ও আয়রণ। ছোলায় আরো থাকে খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস। তাইতো উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাদ্য ছোলা। তাই চলুন জেনে নেয়া যাক, ছোলার কিছু গুণ-

হৃদরোগের ঝুঁকি:

খাবারে ছোলা যুক্ত করলে মোট কোলেস্টেরলের সাথে খারাপ কোলেস্টেরলেরও পরিমাণ কমে। সেই সাথে ছোলাতে বিদ্যমান খাদ্য আঁশ, হৃদরোগের আশঙ্কা কমায়। সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৪০৬৯ মিলিগ্রাম ছোলা খেলে, হৃদরোগ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৯% কমে যায়।

রক্তচাপ:

আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ফলিক এসিডযুক্ত ছোলা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে। এছাড়াও বয়সসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে।

রক্ত চলাচল:

প্রতিদিন ১/২ কাপ ছোলা, শিম এবং মটরের মিশ্রণ, পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বাড়াতে সহায়তা করে। তাছাড়া ছোলায় অবস্থিত আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক, স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্টারির কার্যক্ষমতাকেও বাড়ায়।

ক্যান্সার রোধ:

কোরিয়ান গবেষকেরা প্রমাণ করেছেন, পরিমিত ফলিক এসিড খাবার গ্রহণ করলে নারীরা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সার থেকে ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারেন। আর ছোলায় আছে সেই ফলিক এসিড। ফলিক এসিড রক্তে অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপও কমিয়ে দেয়।

মেরুদণ্ডের ব্যথা:

চোলায় আছে ভিটামিন ‘বি’। ভিটামিন ‘বি’ মেরুদণ্ডের ব্যথা, স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়। ছোলাতে থাকা আমিষ মাংস বা মাছের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্যতালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংসের প্রয়োজন পরে না। আমিষ ত্বক মসৃণ করে।

ডায়াবেটিস:

ছোলার শর্করাতে  গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল।

রক্তের চর্বি:

ছোলাতে থাকা ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়।

উপরোক্ত গুণাবলী ছাড়াও ছোলা আমাদের আরো কিছু শারীরিক উপকার করে থাকে। পরিমিত ছোলা গ্রহণে কোষ্ঠকাঠিন্য, শরীরের অস্থিরতা, হাত-পায়ের জ্বালাপোড়া কমে। সেই সাথে বৃদ্ধি পাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও হাড়ের শক্তি।

আমাদের দেশে ছোলা পরিচিত এক খাবার। বিভিন্ন ঘরোয়া আয়োজন ছাড়াও রমজান মাস জুড়ে আমাদের খাদ্য তালিকায় থাকে এই ছোলা। তবে ভাজার চেয়ে কাঁচা বা সেদ্ধ ছোলার গুণই বেশি। আদার সঙ্গে কাঁচা ছোলা খেলেই তা শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের যোগান দেয়। আমিষ মানুষকে স্বাস্থ্যবান বানায় এবং অ্যান্টিবায়োটিক রোগ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। তাই হজমশক্তি বুঝে ছোলা খেতে হবে নিয়মিত।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর