img

করোনাভাইরাসের আতঙ্ক না কাটতেই, ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার করোনার কারণে ডেঙ্গু নিয়ে আলোচনা কম। ইতিমধ্যে চলতি বছরের ২৬ মার্চ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৬৯ জন। গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রথম তিন মাসে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় চার গুণ বেশি বলছেন স্বাস্থ্য অদিদপ্তর।  

গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ লোক প্রাণ হারিয়েছে। আর সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ১৭৯। গত বছরের প্রথম তিন মাসের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরো বেশি হতে পারে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুত আক্রান্ত রোগী ছিল ৭৩ জন। যা ২০১৬ সালে ছিল ৩৩ জন, ২০১৭ সালে ১৮৬ জন এবং ২০১৮ সালে ৫২ জন।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কর্মরত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছরের প্রথম তিন মাসে এডিস মশার ঘনত্ব অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। এ বছর ডেঙ্গু মৌসুমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে।

সাধারণত এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত সময়কে ডেঙ্গুর মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই মৌসুম শুরুর আগে মার্চ মাস থেকেই ডেঙ্গু প্রতিরোধে কর্মসূচি শুরু করার কথা। তবে করোনাভাইরাস নিয়ে ব্যস্ত, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গু নিয়ে মনোযোগ কম। ফলে মশার ওষুধ ছিটানো এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে কিছুটা ধীরগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

মশার বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গবেষণা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। তিনি ধারনা করছেন, এ বছরের জুলাই ও আগস্টে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়বে। তাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আগে থেকে নাগরিকদের সচেতন করা এবং এডিস মশার বংশবিস্তারের স্থান নিয়ন্ত্রণের কাজে জোর দিতে হবে।

স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দেশের সিটি করপোরেশনগুলোকে নিয়ে একাধিক প্রস্তুতিমূলক সভা করা হয়েছে। মশার ওষুধ সংগ্রহ, মশার ঘনত্ব নিয়ে জরিপ চালানোসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়েছে।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সচিবালয়ে সরকার বিভাগে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে কর্মপরিকল্পনা নিয়ে সভা হয়। এতে মশানিধন ও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের বছরব্যাপী কর্মপরিকল্পনা জমা দেয় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। সেই কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী মার্চ থেকে যেসব কর্মসূচি পালন করার কথা, সেগুলোর অধিকাংশই হয়নি।

ব্যাখ্যা দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান। তার মতে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। আগে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাদানের সঙ্গে জড়িতদের দিয়ে ডেঙ্গু বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজ করানো হতো। এখন তাদের করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যুক্ত করা হচ্ছে। স্কুলগুলোও বন্ধ থাকার কারণে ডেঙ্গু নিয়ে পরামর্শ ও সচেতনতামূলক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর