img

ইন্টারনেটের যুগে অনিদ্রার সমস্যা বেড়েই চলেছে। ঘুমানোর আগে কয়েক মুহূর্তের জন্য ফোন ঘাটতেই হবে। তবে সেই ঘাটাঘাটি শেষ হতে হতে পার হয়ে যাচ্ছে মধ্যরাত। সকাল থেকে আবার ছুটতে হবে ক্লাস, অফিস, সংসার নিয়ে। অর্থাৎ আপনার ঘুমের কোটা থেকেই যাচ্ছে অপূর্ণ। এসবের মাঝে আবার যোগ হয়েছে করোনাভাইরাস। চারিদিকের অসুস্থতা, মিডিয়ার ভয়ার্তক সংবাদ দুশ্চিন্তায় ফেলছে আমাদের। আর অনিদ্রার প্রথম কারণ এই দুশ্চিন্তাই।

দীর্ঘদিনের অনিদ্রা মানবদেহের ভায়াবহ ক্ষতি করে থাকে। তাই বিষয়টিকে একেবারেই খাটো করে দেখা যাবে না। পরিসংখ্যান বলে, বিশ্বে প্রায় ৪৫ শতাংশ মানুষ অনিদ্রায় আক্রান্ত। এর ভয়াবহতা জানাতে ও প্রতিরোধ পেতেই প্রতিবছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার বিশ্ব ঘুম দিবস হিসেবে পালিত হয়।

স্লিপ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সৌরভ দাস জানান- সব বয়সের মানুষের ঘুমের সমস্যা হতে পারে। যার প্রধান কারণ অনিয়ন্ত্রিত লাইফস্টাইল। অথচ নিয়মিত গভীর ঘুমের অভাব হলে মানসিক সমস্যার পাশাপাশি শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। ঘুম সংক্রান্ত সমস্যার মাঝে অ্যাডিনয়েড, ইনসমনিয়া, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া, রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম, সোমনামবুলজিম পরিচিত কিছু অসুখের নাম।

কম ঘুম বা অনিদ্রার অপকারিতা

ঘুম ভাল না হলে সাধারণত ডিপ্রেশন বা মানসিক চাপ বাড়লেও, এই সমস্যার প্রভাব আমাদের জীবনকে কঠিন করে তোলে। যেমন কাজের প্রতি মনযোগ কমে যাওয়া। ফলে বড়দের জন্য অফিস বা ঘরের কাজ করাটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য হয়ে উঠে। অন্যদিকে বাচ্চাদের পড়াশোনায় আগ্রহ কমে গিয়ে খারাপ রেজাল্টের কষ্ট সহ্য করতে হয়। এছাড়াও মেজাজ খিটখিটে, বাচ্চাদের বৃদ্ধি ব্যাহত, মন খারাপ, অল্পতেই রেগে যাওয়া, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদির মতো সমস্যাও হতে পারে।

প্রতিরোধের উপায়

• বিছানায় যাওয়ার অন্তত তিন থেকে চার ঘণ্টা আগেই ভারী খাবার ও মিষ্টি খাওয়া সেরে ফেলুন।

• নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার ও জেগে উঠার নিয়ম করুন। বেড়াতে গেলেও এই রুটিনের যেন হেরফের না হয়।

• রাতে বেশি পানি পান করবেন না। এতে ঘুম ভেঙ্গে বার বার উঠতে হবে।

• ঘুমাতে যাওয়ার ৬ ঘণ্টা আগে থেকে চা, কফি, সিগারেট থেকে দূরে থাকুন।

• সকাল-সন্ধ্যে হালকা ব্যায়াম করুন। তবে রাতে নয়। এতে ভাল ঘুম হয়।

• নেশার অভ্যাস যাদের আছে তাদের ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে।

• ঘুমানোর আগে শরীর পরিষ্কার করে ফ্রেশ হয়ে নিন। চাইলে হালকা গান কিংবা বই পড়তে পারেন।

• বেশি আঁটসাঁট কাপড় পড়ে ঘুমাতে যাবেন না। অস্বস্তি হয়। তাই সুতির পোশাক পরুন।  

মাঝে মাঝে এমনিতে দু’-এক দিনের জন্য ঘুমের সমস্যা হতেই পারে। তাতে ঘাবড়াবার কিছু নেই। তবে মাসখানেক এই সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়াই ভাল। আরেকটি কথা, ঘুমের সমস্যা হলে ঘুমের ওষুধ না খাওয়াই ভাল। এতে শরীর ঘুমের জন্য ঔষুধের উপর নির্ভর হতে শুরু করে।

জিরোআওয়ার২৪/এমএ

এই বিভাগের আরও খবর