সন্তান লালনে কঠোর শাসন?
সন্তান লালনে মা-বাবা তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। শিশুর সকল চাহিদা পূরণে নিরলস পরিশ্রম করেন তারা। তারপরও কোথায় যেন কিছু একটা ভুল হয়ে যায়। মানব বিকাশের নানা রহস্য খোলাসার সাথে, অনেক নতুন প্রশ্নেরও আবির্ভাব ঘটেছে। যার একটি ‘সন্তানকে ভালো ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে কি না? কঠোর শাসনে সন্তান লালনের প্রথা চলে আসলেও, সেই ধারণা থেকে বের হয়েছেন অনেক বাবা-মা। কিন্তু তারপরও যেন রয়ে যায় সংশয়।
আধুনিক সময়ে ছোট পরিবারের জন্য সন্তান লালনের নিয়ম নীতি অনেকটাই বদলেছে। মা এক হাতে সামলাচ্ছেন সন্তানকে। আর মা-বাবা দু’জনই কর্মজীবী হলে সন্তান বড় হয় বুয়ার কাছে। ফলে মা-বাবার অভাব শিশুকে খিটখিটে করে দেয়। এসময় সহজ উপায় শিশুকে বকা দেয়া। এতে থেমেও যায় সন্তান। কিন্তু ‘আমেরিকান একাডেমি অব পেডিয়েট্রিকস’ জানায়, শিশুর জেদ থামাতে বকাঝকা শিশুকে আরো বেশি খিটখিটে মেজাজের করে তুলতে পারে। সাথে তার ব্যক্তি ও মানসিক গঠনে প্রভাব পড়তে পাড়ে। এই সামান্য বকা শিশুর কাছে মা-বাবাকে খারাপ বানিয়ে দিতে পারে।
গবেষকরা এর কারণ বলছে, যেহেতু বাড়িতে আর কেউ নেই, তাই অভিভাবকে প্রতি শিশুর আবদার বেড়ে যায়। তাই তাদের কাছ থেকে আসা সামান্য কড়া কথাও তাকে গভীর ভাবে আহত করে। সেজন্য অনেক সময় হিতে বিপরীত হয়। যে কাজের জন্য বকা হয়, শিশু সেটাই আরো বেশি করতে থাকে।
তাহলে কি করবেন?
এই প্রশ্নের উত্তর বিশেষজ্ঞ দিয়েছেন পাঁচটি উপায়ে-
প্রথমত, শিশুকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে বকা দিলেও তার উপর রাগ করে কখনোই বকা দিবেন না। প্রয়োজনে রাগ করে তার থেকে একটু দুরত্বে থাকুন। যত কষ্ট হউক, শিশুকে বোঝান। কেন তাকে বারন করা হচ্ছে তা সময় নিয়ে আলোচনা করুন।
দ্বিতীয়ত, রাগ উঠলেই নিজের কপাল চেপে ধরুন। সমাধানটি হাস্যকর মনে হলেও এটি পরীক্ষিত। আমাদের ‘লিম্বিক সিস্টেম’ থেকে রাগের জন্ম। সে কারণেই কপাল চেপে ধরলে রাগ প্রশমিত হয়। রাগ কমলে আপনি কি করতে চান তা সিদ্ধান্ত নিন।
তৃতীয়ত, শিশু জেদ করলে তাকে অন্য কিছুতে ব্যাস্ত করুন। অদ্ভুত কিংবা হাসির কিছু করুন। দেখবেন সন্তান তার জেদের ব্যপারটাই ভুলে গিয়েছে।
চতুর্থ, শিশুকে শান্ত গলায় কঠিন কথা বলুন। খুব বেশি ঘনঘন রাগ করলে এক সময় সন্তান সেই রাগকে আর ভয় পাবে না। তাই শিশুর কোন আচরণ পছন্দ না হলে তাকে সাবধান করুন।
সর্বশেষ, ধৈর্য্য ধরতে হবে। সন্তান মানুষ করা কোন ভাবেই সহজ না। তাই বারবার তাকে বলতে হবে। শিখাতে হবে। একই সঙ্গে একবারেই সব করা সম্ভব না তা শিশুকে বলতে হবে। এতে সে আপনার আদেশ মানতে বারবার চেষ্টা করতে আগ্রহী হবে।
জিরোআওয়ার২৪/এমএ