img

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে ২৩তম স্প্যান বসানোর সম্পন্ন হয়েছে। এতে সেতুর ৩৯০০ মিটার দৃশ্যমান হলো। মঙ্গলবার (১০ মার্চ) সকালে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারে ৫-ডি আইডি নম্বরের স্প্যানটি বসানো হয়। সকাল ৯টার দিকে স্প্যানটি বসানো সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে সোমবার (৯ মার্চ) সকালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ার কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে স্প্যানটি ২৮ ও ২৯ নম্বর পিলারের কাছে নিয়ে রাখা হয় বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতুর সহকারী প্রকৌশলী হুমায়ুন কবীর এ তথ্য জানিয়েছেন।এর আগে, সোমবার (৯ মার্চ) সকাল সাড়ে ৮টায় ধূসর রঙের ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিন হাজার ১৪০ টন ওজনের স্প্যানটিকে সকাল সাড়ে ৯টায় তিন হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ‘তিয়ান ই’ ভাসমান ক্রেন বহন করে নিয়ে আসে। প্রকৌশল সূত্রে জানা যায়, ভাসমান ক্রেনটি নোঙর করে পজিশনিং করে ইঞ্চি ইঞ্চি মেপে স্প্যানটিকে তোলা হয় পিলারের উচ্চতায়। এরপর দুই পিলারের বেয়ারিংয়ের ওপর রাখা হয় স্প্যানটিকে। খুঁটিনাটি বিষয়গুলো আগে থেকেই বিশেষজ্ঞ প্যানেল দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চীনা শ্রমিকদের একটি বড় অংশ অনুপস্থিত। যার প্রভাবে কাজের গতি স্বাভাবিক রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ২৬ তম স্প্যানটি অল্প সময়ের মধ্যে বসানোর কথা থাকলেও এসবের কারণে বেশি সময় নিয়ে বসানো হলো। ইতোমধ্যে পদ্মাসেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ৪০টি পিলারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি দুইটি পিলারের কাজ শেষ হবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে। চীন থেকে আসা দুইটি স্প্যানসহ মোট ৩৯টি স্প্যান এখন মাওয়ায় আর বাকি দুইটি আসার অপেক্ষায়।২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ বহুমুখী সেতুর মূল আকৃতি হবে দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হচ্ছে এ সেতুর কাঠামো।সেতুতে কাজের গতি বাড়াতে রোবটের ব্যবহার: পদ্মাসেতুতে করোনার প্রভাব মোকাবিলায় রোবট এসেছে। চীনা প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের একটি বড় অংশ পদ্মাসেতুর কাজের সঙ্গে যুক্ত৷ বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে সেতুতেও। সেতুর কাজে নিয়োজিত চীনাদের একটি বড় অংশ আটকা পড়েছে চীনে। সেতুর কাজের গতিকে স্বাভাবিক রাখতে সেতুতে যোগ হয়েছে রোবট। মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে স্প্যানের টুকরো জোড়া দেওয়ার জন্য ওয়েল্ডিংয়ের কাজে ব্যবহার হচ্ছে ৬টি রোবট৷ এসব রোবট আনা হয়েছে চীন থেকে, দীর্ঘদিন ধরে ট্রায়ালে থাকার পর সম্প্রতি কাজ করছে পুরোদমে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকৌশলী জানান, ১৫-২০ জন শ্রমিকের কাজ করতে পারে এসব রোবট। স্প্যানের টুকরো জোড়া দেওয়ার জন্য ওয়েল্ডিংয়ের কাজে এসব ব্যবহার হচ্ছে। কম সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হচ্ছে। তবে আরো রোবট আনা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর