img

রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে প্রথম সংগঠন তমদ্দুন মজলিস। এ প্রসঙ্গে তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, 'ভাষা আন্দোলনের শুরু থেকে তমদ্দুনের ভূমিকা ছিল অগ্রণী। তারাই এ ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগ নেন।' স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, 'কাসেম সাহেব এই তমদ্দুন মজলিস নামের একটি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান করেছিলেন। তারা বাংলাকে কোর্ট বা আদালতের ভাষা করা দরকার এই মর্মে আন্দোলন করেছিলেন।'
ভাষাসৈনিক ও রাজনীতিবিদ অলি আহাদ বলেছিলেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান এবং রসায়ন বিজ্ঞানের অধ্যাপকদ্বয় আবুল কাসেম ও নূরুল হক ভুইয়া ধূমায়িত অসন্তোষকে সাংগঠনিক রূপদানের প্রচেষ্টায় ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান তমদ্দুন মজলিস গঠন করেন। এই সংগঠনই ভাষা আন্দোলনের গোড়াপত্তন করে।'
তমদ্দুন মজলিস নিয়ে ভাষাসৈনিক ও রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ তোয়াহা, তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক এমএলএ অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, ১৯৫২ সালের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক কাজী গোলাম মাহবুব, ভাষাসৈনিক আব্দুল মতিন, বাংলা একাডেমির সাবেক
মহাপরিচালক ড. নীলিমা ইব্রাহিম, বদরুদ্দীন উমর, বশীর আল হেলালসহ আরও অনেকে নানা স্মৃতিচারণা ও মূল্যায়ন করেছেন।
ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পরিণতি ঘটে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রম্নয়ারি। দিনটি ছিল বৃহস্পতিবার। সেদিন ঠিক বেলা ৩টায় পুলিশ ১৪৪ ধারা ভঙ্গকারী ছাত্রজনতার ওপর গুলি ছোড়ে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের রাস্তায় পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর পুলিশ বাহিনী নিরীহ ছাত্রজনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি চালায়। সেই দিন চিত্রগ্রাহক আমানুল হকের ক্যামেরায় ধরা পড়ল শহিদ রফিক উদ্দিনের গুলি খাওয়া মাথার মগজ রাস্তায় ছড়িয়ে থাকার ছবি। একুশের প্রথম শহিদ। একই দিনে মারা যান আর চারজন বরকত, জব্বার, সালাম আর বালক অহিউল। এর পরদিন মারা যান শফিউর। রক্তের বিনিময়ে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে বিজয় লাভ করে বীর বাঙালি।

এই বিভাগের আরও খবর