img

সু-স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি নারীদের কিছু ভিটামিন রয়েছে। প্রতিটি নারীরই সেসব ভিটামিনের কার্যকারিতা এবং কোন কোন খাদ্যে সেসব ভিটামিন পাওয়া যায় সে সম্পর্কে জানা থাকাটা জরুরি। একটি ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভাসই যে কোনো নারীকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। সেই খাদ্যাভ্যাসকেই ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাস বলা হয় যেটি একজন মানুষকে তার দেহের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান যথাযথ পরিমাণে সরবরাহ করে। তা না হলে কিন্তু পুষ্টি ঘাটতিজনিত রোগ বালাই হতে পারে। আসুন জেনে নেওয়া যাক নারীদের সু-স্বাস্থ্যের জন্য জরুরি ভিটামিন কোনগুলো।

ভিটামিন এ : চোখের জ্যোতি, শক্ত হাড়, স্বাস্থ্যবান দাঁত এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এই ভিটামিন জরুরি। গাজর, স্পিনাক, পাতাকপি, ব্রোকোলি, ডিম, পেঁপে, টমেটো, দুধ, অ্যাপ্রিকোট, পিচ এবং পেয়ারাতে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।

ভিটামিন বি২ : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো, বিপাকীয় প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করা এবং দেহের শক্তি বাড়ানোর জন্য দরকার এই ভিটামিন। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে গলা ব্যাথা, মুখে ঘা, ঠোঁটে ক্ষত, চুলে শুষ্কতা এবং ত্বতে চুলকানি দেখা দিতে পারে। দই, কাজুবাদাম, পনির, দুধ, ডিম, খামির, শস্য এবং সবুজ শাকসবিজ এর উৎস।

 

ভিটামিন বি৬ : এই ভিটামিনের অপর নাম পাইরিডক্সিন। এই ভিটামিন গর্ভবতী নারীদেরকে সকাল বেলার অসুস্থতা প্রতিরোধ সহায়তা করে। এই ভিটামিনের অভাবে রক্তশুন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। এই ভিটামিন রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায় এবং রক্তে সুগারের হার নিয়ন্ত্রণ করে। শীম, শুকনো ফল, মাছ, বীজ, কলা, ওটমিল, অ্যাভোকাডো এবং পশুমাংসে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।

ভিটামিন বি৭ : কোষেদের বৃদ্ধি, ফ্যাটি এসিডের সংশ্লেষণ, স্বাস্থ্যকর ঘাম গ্রন্থি, হাড়ের বৃদ্ধি এবং রক্তে কোলোস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সহায়ক এটি। এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে অবসাদ, রক্তশুন্যতা, চুল ভেঙ্গে যাওয়া, ত্বকের র‌্যাশ এবং হার্টবিটের সমস্যা দেখা দিতে পারে। দই, গাজর, বাদাম, কাজুবাদাম ডাল, সবুজ শাকসবজি, দুধ, মরিচ, মাছ, পনির এবং কলাতে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।

ভিটামিন বি৯ : এর অপর নাম ফলিক এসিড। এই ভিটামিনটি শুধু নারীদের জন্যই বিশেষভাবে দরকার। গর্ভবতীদের জন্য এটি সবচেয়ে বেশি দরকারি। কারণ এই ভিটামিন গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠার জন্য জরুরি। এই ভিটামিন উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং মস্তিষ্কের স্মৃতিভ্রংশ রোগও প্রতিরোধ করে। গর্ভবতী নারীদের এই ভিটামিনের ঘাটতি হলে শিশুর জন্মের সময় কোনো ত্রুটি নিয়ে জন্মাতে পারে। শীম, ডিম, কমলা, স্ট্রবেরি, কলাই জাতীয় শুঁটি এবং তরমুজে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।

ভিটামিন বি১২ : হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো, অবসাদ, স্মৃতি সংক্রান্ত সমস্যা এবং রক্তশুন্যতার সমস্যা দূরীকরণে সহায়ক এই ভিটামিন। এর ঘাটতি হলে বিরক্তি, মনোযোগ নিবদ্ধ করণে সমস্যা, অবসাদ এবং মুখের প্রদাহ প্রভৃতি সমস্যা দেখা দিতে পারে। পনির, ডিম, দই, দুধ, মাছ এবং মাংসে এই ভিটামিন আছে প্রচুর।

ভিটামিন সি : রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য ভিটামিন সি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই ভিটামিন যে কোনো রোগ থেকেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সহায়তা করে। এছাড়া লাল রক্ত কোষ উৎপাদন এবং হৃদরোগ ভালো করে। লেবু ও কমলাসহ সাইট্রাস ফল, কিউইম টমেটো, জাম্বুরা, ব্রোকোলি, আলু এবং বাধাকপিতে এই ভিটামিন পাওয়া যায়।

ভিটামিন ডি : আজকাল অনেক নারীই অস্টিওপোরোসিসে আক্রান্ত হন। খাদ্য থেকে ক্যালসিয়াম শোষণের জন্য এই ভিটামিন দরকার। তার মানে আপনার হাড়েরও দরকার হয় ভিটামিন ডি। এই ভিটামিন চোখের দৃষ্টির সমস্যাও দূর করে। এছাড়া স্নায়বিক রোগ, আথ্রাইটিস এবং বিশেষ কিছু ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধ করে এটি। সূর্যের আলো এই ভিটামিনের সবচেয়ে ভালো উৎস। দুধ, কলিজা, ডিম এবং মাছেও ভিটামিন ডি আছে।

এই বিভাগের আরও খবর