img

বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানির জন্য কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিদ্যমান তিন বছরের পরিবর্তে সাত বছর শতভাগ কর অবকাশ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সংস্থাটি। একই সঙ্গে পরবর্তী তিন বছরের জন্য ৭০ শতাংশ হারে অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত এসআরও জারির মাধ্যমে এ অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে। এনবিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে বেসরকারি ও বিদেশী বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে বিদ্যুৎ খাতে ১০ বছরের জন্য কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম তিন বছর শতভাগ ও পরবর্তী সাত বছর সর্বোচ্চ ৮০ থেকে সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ অবকাশ সুবিধা গ্রহণের বিধান রাখা হয়েছিল। তবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের কথা চিন্তা করে খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে এখন সাত বছরের জন্য শতভাগ ও পরবর্তী তিন বছরের জন্য ৭০ শতাংশ হারে অবকাশ সুবিধা দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালে দেয়া এ সুবিধা ২০২৫ সাল পর্যন্ত কার্যকর হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ১৯৮৪ সালের আয়কর অধ্যাদেশের ৪৪ ধারার উপধারা (৪)-এর ক্লজ (বি)-এর ক্ষমতাবলে ২০১৫ সালের ৮ জুলাইয়ের এসআরও সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত এসআরও অনুযায়ী প্রথম তিন বছর শতভাগ, চতুর্থ বছর ৯০ শতাংশ, পঞ্চম বছর ৭০, ষষ্ঠ বছর ৬০, সপ্তম বছর ৫০, অষ্টম বছর ৪০, নবম বছর ৩০ ও দশম বছর ২০ শতাংশের পরিবর্তে প্রথম সাত বছর শতভাগ ও পরবর্তী তিন বছর ৭০ শতাংশ করা হলো। এনবিআরের আয়কর অধ্যাদেশের ৪৪-এর ৪ উপধারা অনুযায়ী, ব্যক্তিখাতের রেন্টালভিত্তিক পাওয়ার প্লান্টের জন্য কর অবকাশ সুবিধা প্রযোজ্য হবে। এক্ষেত্রে কোম্পানিগুলোকে সংশ্লিষ্ট কর কমিশনারের কাছ থেকে সনদ নিতে হবে। সনদ নেয়া প্রতিষ্ঠানকে আয়কর আইন মেনে চলতে হবে। তবে কোনো কোম্পানি আইন না মানলে যেকোনো সময় সংশ্লিষ্ট কমিশনার কর্তৃক এ অবকাশ সুবিধা প্রত্যাহার করা যাবে। জানা গেছে, বর্তমানে দেশে সবচেয়ে লাভজনক ব্যবসা বিদ্যুৎ খাতে। বর্তমানে এ খাতে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ১২৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠেছে ৮৯টি। দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে বড় বিদেশী প্রতিষ্ঠান এলেও এ খাতে এখনো শীর্ষ প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ। সামিটসহ দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মোট সাতটি বেসরকারি কোম্পানি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবসা করছে। এগুলো হলো ডরিন পাওয়ার লিমিটেড, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, শাহজিবাজার পাওয়ার, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, বারাকা পাওয়ার ও জিবিবি পাওয়ার লিমিটেড। কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোম্পানিগুলোর নিট মুনাফার মার্জিন প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর তুলনায় অনেক বেশি। দেশে ব্যবসায় লগ্নীকৃত মূলধন ও ব্যবহূত সম্পদের বিপরীতে রিটার্নেও সবচেয়ে এগিয়ে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো।

এই বিভাগের আরও খবর