img

বাস-ট্রাম-ট্যাক্সি চড়ার কথা শুনলেই ভয় করে? একা আপনি নন, প্রবল মাথার যন্ত্রণা বা বমি ভাবের জ্বালায় অনেকেই এই যানবাহনগুলো থেকে দূরে থাকেন। সারা বছর আলাদা করে হজম সংক্রান্ত কোনও সমস্যা না থাকলেও বাসে-ট্রাম-ট্যাক্সি একটু গতিতে চললেই অনেকের এমনটা হয়।

কিন্তু কেন এমন হয়? অন্য সময় স্বাভাবিক থাকলেও নির্দিষ্ট একটি গতির মধ্যে থাকলেই শরীরে এমন সমস্যা হওয়ার কারণই বা কী?

চিকিৎসকদের মতে, মানুষের শরীরের তিনটি অংশ গতি নির্ণয় করে। চোখ, অন্তঃকর্ণ ও ত্বক। এই তিনটি অংশকেই ‘সেনসরি রিসেপ্টর’ বলা হয়। এরাই এই গতির অনুভূতিকে পাঠিয়ে দেয় মস্তিষ্কে। এই তিন সেনসরি রিসেপ্টরের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোনও অসামঞ্জস্য থাকলে তখনই এমন ‘মোশন সিকনেস’-এর সমস্যা হয়।

সকলের ক্ষেত্রে এই অসামঞ্জস্য দেখা যায় না বলেই তারা মোশন সিকনেসের শিকার হন না। তবে চিকিৎসকদের মতে, এই অসুখ কিছুটা যেমন শারীরবৃত্তীয় তেমন কিছুটা মানসিকও বটে। পূর্বের অভিজ্ঞতা ভাল না হওয়ায় গাড়িতে ওঠার আগেই একটা ‘প্যানিক সিকনেস’ তৈরি হয়ে যায়। তা শরীরের উপরেও চাপ ফেলে। তবে কিছু নিয়ম ও কৌশল মেনে চললে এই অসুস্থতাকেও বাগে আনা যায়। আজ থেকেই অনুসরণ করুন সেই সব উপায়।

# গাড়িতে চড়লে কোনও রকম অসুবিধা হবে না, মনকে এটাই বোঝান আগে। এই শারীরবৃত্তীয় সমস্যাকে সরাতে আগে মানসিক জোরকেও বাড়াতে হবে।

# গাড়িতে বসে সামনের কাচের দিকে বা গাড়ির মধ্যের যন্ত্রপাতির দিকে না তাকিয়ে রাস্তা, বাইরের মানুষ, প্রকৃতি এ সব দেখুন। চোখ, অন্তঃকর্ণ এতে আরাম পাবে। যাত্রাপথের বিপরীতেও দেখবেন না। সেনসরি অর্গানের অসামঞ্জস্যতাআসতে পারে।

# একটানা গাড়িতে বসবেন না। মাঝে মাঝেই নামুন, ব্যক্তিগত গাড়ি না হলে দীর্ঘ পথ যাওয়াকে দু’টি-তিনটি ভাগে ভেঙে নিন। এমনিতেও দীর্ঘযাত্রার বাসগুলিও মাঝে মাঝে এক একটি জায়গায় থামে। তখন সেখানে নেমে একটু হাঁটাচলা করে নিন।

# পেট্রলের গন্ধ তাড়াতে ব্যাগে রাখুন সুগন্ধী। মাঝে মাঝেই তা স্প্রে করুন শরীরে। ব্যাগে কয়েকটা লেবু পাতা রাখুন ও গাড়িতে চড়ে তা নাকের কাছে ধরুন মাঝে মাঝেই। এতে গা গোলানোর সমস্যা অনেকাংশে কমবে। লেবু পাতা কমিয়ে দেয় গা গোলানোর সমস্যা। 

# গাড়িতে বসে মোবাইল ঘাঁটবেন না। মোবাইলের রশ্মি থেকেও বমি ভাব বাড়ে। কম ঝাঁকুনির সিট বাছুন। তাতে সমস্যা অনেকটা কমবে।

# শ্বাস-প্রশ্বাসের স্বাভাবিক ব্যায়ামগুলো রপ্ত করতে পারলে ভাল হয়। জোর শ্বাস নিয়ে খুব ধীরে ধীরে ছাড়ুন।

# মন অন্য দিকে রাখতে মন ভাল রাখার সুরেলা গান শুনুন। তবে সে গানে খুব বেশি বাজনার প্রভাব থাকলে মস্তিষ্ক বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে। তাই শান্ত, সুরেলা গান শুনুন।

এই বিভাগের আরও খবর