img

রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে নিখোঁজ কোরিয়া প্রবাসী পিএইচডি গবেষক এনামুল হক অপহৃত হননি। তাকে আটক করেছে র‍্যাব। শনিবার দুপুরে বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।

সম্প্রতি দেশের প্রথম সারি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটের আদলে নকল সাইট তৈরি করছিল একটি মহল। র‌্যাব বলছে, সেসব নকল সাইটের তৈরির মূল হোতা কোরিয়া প্রবাসী এনামুল হক মনি।

র‌্যাব জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে আমরা প্রথম আলো, বিবিসি বাংলা, বাংলা ট্রিবিউন থেকে অভিযোগ পাই যে তাদের ওয়েব সাইটের আদলে নকল সাইট তৈরি করে একটি মহল পাঠকদের বিভ্রান্ত করে ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করছে। এ বিষয় নিয়ে কাজ করতে গেলে আমরা এনামুলের খোঁজ পাই। তিনি এসবের মূল হোতা।

শনিবার র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান এ তথ্য জানান।

এএসপি মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সাইট ক্লোন বা নকল করার অপরাধে গবেষক এনামুল হককে আটক করা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

র‍্যাব-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ‘শনিবার দুপুরে বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে এনামুলকে আটক করা হয়েছে। এনামুল দক্ষিণ কোরিয়ায় বসে দেশের বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালের ২২টি নকল সাইট পরিচালনা করতেন। বেশিরভাগ সময় হুবহু কপি করে নিউজ দিলেও মাঝে-মধ্যে নিজের ইচ্ছেমতো সরকারবিরোধী লেখা সাইটে প্রচার করতেন।’

এনামুলের গ্রামের বাড়ি পাবনায়। এক ছেলের বাবা এনামুল বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে বৃত্তি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার কিওংপুক ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে (কেএনইউ) পিএইচডি করছেন। গত ২১ নভেম্বর রাতে আশকোনার একটি বাসা থেকে বিমানবন্দরের উদ্দেশে বের হওয়ার পর এনামুলের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। তার দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার কথা ছিল।

এনামুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ২২ অক্টোবর এক মাসের ছুটিতে বাংলাদেশে আসেন এনামুল। গত বুধবার রাত ১টার দিকে তার কোরিয়া যাওয়ার কথা ছিল। বুধবার সকালে শ্বশুরবাড়ি টাঙ্গাইল থেকে ঢাকায় এসে আশকোনায় এক বন্ধুর বাসায় ওঠেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে বন্ধুর বাসা থেকে বেড়িয়ে রিকশাযোগে বিমানবন্দরের দিকে রওনা হন। রাত ১১টা পর্যন্ত মোবাইলে বন্ধুদের সঙ্গে তার কথা হয়। কিন্তু ১১টার পরে মোবাইল ফোন বন্ধ পেলে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পরদিন বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ‘অপহরণকারী’ পরিচয়ে ফোন আসে স্বজনদের কাছে। শুক্রবার ভোর ৬টার মধ্যে দেড় লাখ টাকা দাবি করা হয়। তার পরিবার কথিত অপহরণকারীদের দেয়া নম্বরে ১ লাখ টাকা পাঠিয়েও তাকে ফেরত পায়নি। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) রাতে পরিবারের পক্ষ থেকে দক্ষিণখান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়।

দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তপন চন্দ্র সাহা শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, র‍্যাবের একটি দল বিমানবন্দর রেলস্টেশন এলাকা থেকে এনামুলকে উদ্ধার করেছে। আমরা তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানিয়েছি।’

Source: Kaler-Kontho

এই বিভাগের আরও খবর