শিশুদের মিথ্যা বলা থেকে দূরে রাখবেন যেভাবে
সাধারণত তিন বছর বয়স থেকেই শিশুরা মিথ্যা বলা শুরু করে। কারণ তখন থেকেই তারা বুঝতে শুরু করে কেউ তাদের মনের কথা বুঝতে পারবে না। ৪ থেকে ৬ বছর বয়সে এটা ধীরে ধীরে বাড়ে। যখন শিশুরা মিথ্যা বলা শুরু করে তাদের চেহারায় তা ফুটে ওঠে। কণ্ঠস্বরেও পরিবর্তন দেখা দেয়। ওই সময় যদি তাদের পুরো ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করতে বলা হয় তখন তাদের কথা আটকে যায়।
মনোবিজ্ঞানীদের ভাষায়, কয়েকটা কারণে শিশুরা মিথ্যা বলা শুরু করে। যেমন-
১. তারা কোন ধরনের সমস্যায় পড়তে চায় না।
২. তাদের কথা শুনে বড়রা কিভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় তারা তা দেখতে চায়।
৩. তাদের গল্প আরও মজার করতে তারা এমন করে।
৪. অনেকসময় আপনি সত্যিটা জানলেও শিশুরা মিথ্যা বলে। কারণ তারা মনোযোগ চায়।
৫. কোন কিছু চাইতে হলেও তারা মিথ্যা বলে। যেমন-দাদী বা নানীকে গিয়ে বলে মা আমাকে ঘুমানোর আগে চকলেট দেবে বলেছে।
শিশুরা সত্য ও মিথ্যা বলার পার্থক্য বোঝে না। কিন্তু তাদেরকে সত্য বলতে উৎসাহ দিতে হবে ছোট থেকেই। তাকে বোঝাতে হবে, সত্য কথা না বললে আপনি কতটা মন খারাপ করেছেন।
শিশুকে সত্য বলা শেখাতে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন।
১.যদি সে কোন ধরনের গল্প বানিয়ে বলে তখন তাকে বলতে পারেন, বাহ, গল্পটা তো খুবই চমৎকার। এটা দিযে আমরা একটা বই লিখতে পারি। তাহলে মিথ্যা বলা ছাড়াই তার মধ্যে কল্পনাশক্তি বাড়বে।
২. কোনো পরিস্থিতিতে যাতে শিশুকে মিথ্যা বলতে না হয় সেটা খেয়াল রাখুন। যেমন- আপনার শিশুটি হয়তো কিছু নষ্ট করে ফেলেছে আর আপনাকে লুকাতে মিথ্যা বলার চেষ্টা করছে। তার আগেই শিশুকে বলুন, আমি দেখেছি তুমি এটা করেছ। চলো পরিষ্কার করে ফেলি। এরপরে সাবধানে করো।
৩. নতুন কিছু করলে শিশুকে উৎসাহ দিন, প্রশংসা করুন। তাহলে তার আত্মবিশ্বাস বাড়বে।
৪. ভুল করলেও তা তাকে স্বীকার করতে দিন। যদি সে সত্য বলে, তখন তাকে বলবেন, আমি খুব খুশী হয়েছি তুমি সত্যটা বলেছ। এটা থেকে সে পরিবারের মূল্যবোধ বুঝতে পারবে।
৫. শিশুদের এমন গল্প পড়ে শোনান যেখানে সততাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
৬. বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে ধীরে ধীরে জীবনে সত্য-মিথ্যার গ্রহণযোগ্যতা বোঝান।