img

রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী সাদিয়া নূর মিতা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত আট আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মবিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফজলুল হক খান ফরিদ ও এস এম শাহজাহান। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল।

পরে মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, ‘এই মামলায় কোনো চাক্ষুস সাক্ষী না থাকায় এবং একমাত্র স্বীকারোক্তিকারী আসামি শ্রাবণীর সাক্ষ্য আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন।’

তবে হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তা।

জানা যায়, ২০১০ সালের ৩০ আগস্ট গোপালগঞ্জের নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রী সাদিয়া নূর মিতা। পরে মিতার মরদেহ বাড়ির পার্শ্ববর্তী পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মিতার বাবা লিয়াকত হোসেন মোল্লা গোপালগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে মিতা যে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো সেখানে তার সঙ্গে একই বিছানায় তার আপন ছোট বোন অন্তরা এবং তার চাচাত বোন শ্রাবণী ঘুমিয়ে ছিলো বলে উল্লেখ করা হয়। তবে এজাহারে মিতাকে ঘর থেকে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে কাউকে সন্দেহ করার কথা উল্লেখ করা হয়নি। পরবর্তীতে শ্রাবণী এবং শ্রাবণীর ভাই মনি, জনিসহ আরও কয়েকজনকে আসামি করে পুলিশ আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর শ্রাবণীকে বেশ কয়েকবার রিমান্ডে নিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয় এবং এই জবানবন্দির ভিত্তিতে বিচারকার্য সম্পাদিত হয় বলে অভিযোগ করে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

মামলার বিচার শেষে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে আসামি নিপুন, মামুন ও ডগু খন্দকারকে মৃত্যুদণ্ড, তুষার কাজী, জনি, শ্রাবণী ও শেখ নাজমুলকে যাবজ্জীবন এবং আসামি মনিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মৃত্যু অনুমোদনের জন্য মামলাটি ডেথ রেফারেন্স হিসেবে হাইকোর্টে আসে এবং বিচারিক আদালতের রায়ের আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন।

ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ মামলা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণে সক্ষম না হওয়ায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ মামলার সকল আসামিকে খালাস করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

এই বিভাগের আরও খবর