img

বাংলার সুবেদার হিসেবে খ্যাত শায়েস্তা খাঁকে আমরা চিনি সস্তায় জিনিসপত্র দেওয়ার শাসক হিসেবে। কথিত আছে, তাঁর আমলে টাকায় আট মণ চাল পাওয়া যেত। কিন্তু আমরা কি জানি ঢাকার উন্নয়নে তাঁর অনেক অবদান রয়েছে? ঢাকায় তিনি তৈরি করেছেন অনেক স্থাপনা আর মসজিদ।

তাঁর তৈরি এমনি একটি মসজিদের নাম শায়েস্তা খাঁ মসজিদ। মিটফোর্ড হাসপাতালের পেছানটায় লোকচক্ষুর প্রায় অন্তরালে  মসজিদটি আজও বয়ে চলেছে কিংবদন্তি সেই শাসকের স্মৃতি।

ঢাকায় শায়েস্তা খাঁ যেসব ভবন, মসজিদ বা মন্দির তৈরি করেন সেসবের মধ্যে এ মসজিদই প্রথম। ১৬৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিন গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটি তৈরি করা হয় তৎকালীন কাটরা পাকুড়তলী নামক স্থানে। যেখানে বর্তমানে মিটফোর্ড হাসপাতাল গড়ে উঠেছে, তারই প্রাচীন নাম এটি।

মসজিদের পাশে বুড়িগঙ্গার তীরে গড়ে তোলা হয়েছিলে শায়েস্তা খাঁর প্রাসাদ যার কোনো চিহ্ন বর্তমানে নেই। ৩৭.৮ ফুট দৈর্ঘ্য আর ১৬.৮ ফুট প্রস্থের মসজিদটিতে মোট পাঁচটি আলংকরিক মেহরাবে খিলানযুক্ত প্রবেশপথ ছিল। পরবর্তীকালে উত্তর ও দক্ষিণ দিকের দুটিকে জানালা বানিয়ে পুর্বদিকের তিনটি প্রবেশপথ রাখা হয়েছে।

১৮৫৭ সালে সিপাহি বিপ্লবের সময় অগ্নিকাণ্ডে মসজিদটি  ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরবর্তীকালে ব্রিটিশ সরকারের পূর্ত বিভাগ এ মসজিদটিকে সংস্কার করেন। মসজিদটির উত্তর পাশে শাহজাদী খানম নামে শায়েস্তা খাঁর এক মেয়ের কবর ছিল। পরবর্তীকালে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য কবরটি অপসারণ করা হয়।

মসজিদটিতে ইমাম হিসেবে কর্মরত আছেন হাফেজ মো. বেলাল। তিনি প্রায় ৫০ বছর ধরে মসজিদটিতে ইমামতি করছেন। তাঁর ছেলে মো. কাইয়ুমও মসজিদ দেখাশোনা করেন। কথা হয় কাইউয়ুমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ঐতিহাসিক এ মসজিদটি বিশাল সব অট্টালিকার ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার মানুষজন ভুলতে বসেছে মসজিদটির কথা।

তাঁর খুব ইচ্ছে মানুষজন এ মসজিদ সম্পর্কে জানুক এবং এটি দেখতে আসুক। তিনি নিজ উদ্যোগে মসজিদটির ইতিহাস ছাপিয়ে টানিয়ে রেখেছেন দেয়ালে। কেউ গেলে নিজে আগ্রহ নিয়ে মসজিদ ঘুরিয়ে দেখান।

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-এর মূল প্রবেশপথ দিয়ে প্রবেশ করে বড় ভবনটির পেছনে গেলেই মসজিদটির দেখা পাবেন।

এই বিভাগের আরও খবর