img

নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্তর্গত ঢাকা- চট্রগ্রাম মহাসড়কে মেগড়াপাড়া ক্রসিং থেকে প্রায় আড়াই কিলোমিটার উত্তরে সোনরগাঁও অবস্থিত। সবুজ বন-বনানী আর অনুপম স্থাপত্য শৈলীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে নান্দনিক ও নৈসর্গিক পরিবেশে ঘেরা বাংলার প্রাচীন রাজধানী সোনারগাঁও। ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষভাগে হিন্দু আমলের রাজধানী এখানেই অবস্থিত ছিল বলে ধারণা করা হয়।পরবর্তীকালে মুসলিম শাসকদের পূর্ববঙ্গেও প্রাদেশিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠেছিল।

প্রাচীন সুবর্ণগ্রাম থেকে সোনারগাঁও হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন।কারো কারো মতে বারো ভূইয়া প্রধান ঈশা খা’র স্ত্রী সোনাবিবি’র নামানুসারে সোনারগাঁও নামকরণ করা হয়।

বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদের মধ্যে শিল্পকলা , সংস্কৃতি ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে সোনরগাঁও একটি গৌরবময় জনপদ। আনুমানিক ১২৮১ খ্রিস্টাব্দে এ অঞ্চলে মুসলিম আধিপত্যের সূচনা হয়।মধ্যযুগে এটি মুসলিম সুলতানদের রাজধানী ছিল।১৬১০ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে ঢাকা বাংলার রাজধানী হিসেবে ঘোষিত হবার পূর্ব পর্যন্ত সোনারগাঁও ছিল পূর্ববঙ্গের রাজধানী। ঈশা খাঁ ও তার বংশধরদের শাসনামলে সোনারগঁও ছিল পূর্ববঙ্গের রাজধানী। সোনারগাঁওয়ের আর একটি নাম ছিল পানাম।

পানাম নগরে নির্মিত ভবনগুলো ছোট লাল ইট দ্বারা তৈরী।ইমারতগুলো কোথাও একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন ,আবার কোথাও সন্নিহিত। অধিকাংশ ভবনই আয়তাকার এবং উত্তর দক্ষিণে বিস্তৃত। দীর্ঘ একটি সড়কের উভয় পার্শ্বে দৃষ্টিনন্দন ভবন স্থাপত্যের মাধ্যমে পানাম নগর গড়ে উঠেছিল। উভয় পাশে মোট ৫২টি পুরোনো বাড়ি এই ক্ষুদ্র নগরীর মূল আকর্ষণ।

পানাম শহরের ঠাকুর বাড়ি ভবন ও ঈশা খাঁর তোরণকে একত্রে নিয়ে মোট প্রায় ১৬ হেক্টও স্থান জুড়ে লোকশিল্প ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের অবস্থান।এখানে ১টি যাদুঘর, ১টি লোকজ মঞ্চ,  সেমিনার কক্ষ ও কারুশিল্প গ্রাম রযেছে।এখানকার যাদুঘরে প্রায় সাড়ে চার হাজার নিদর্শন সংরক্ষিত আছে। প্রতি শুক্রবার থেকে বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।তবে শুক্রবার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত জুমআর নামাজের জন্য যাদুঘর বন্ধ থাকে।

প্রতিদিন হাজার হাজার দর্শনার্থী এটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসে।

অনেকেই শিক্ষা সফরের জন্য এই স্থানটি পছন্দ করেন।

এই বিভাগের আরও খবর