img

পৌষের হাড়কাঁপানো শীত আর উত্তুরে ঠান্ডা বাতাসের দাপটে কার্যত থমকে গেছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনজীবন। হিমালয়ের পাদদেশ ঘেঁষা জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে গত পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি। দিনের বেলাতেও কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাচ্ছে চারপাশ, নেমে আসছে আঁধার।

মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) আকাশ খানিকটা পরিষ্কার হলেও ভোর থেকে ঝরছে ঝিরঝিরে শিশির-বৃষ্টি। জেলা জুড়ে এখন কেবলই হাড়কাঁপানো ঠান্ডার দাপট।

উত্তরের হিমেল হাওয়া যেন হুল ফোটাচ্ছে শরীরে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যাচ্ছে স্থানীয়দের। শীতের দাপটে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও দিনমজুররা। কনকনে ঠান্ডায় কৃষি ও খামারের কাজও একপ্রকার স্তিমিত। অফিস-আদালতে উপস্থিতির হার কমে গেছে, রাস্তাঘাটেও লোক চলাচল নামমাত্র।

প্রচণ্ড ঠান্ডায় ঘরে ঘরে বাড়ছে সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্টের প্রকোপ। ঠাকুরগাঁও জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। চিকিৎসক ও নার্সরা রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। শিশুদের পাশাপাশি বয়স্কদের দুর্ভোগ এখন চরমে।  

শুধু মানুষ নয়, রেহাই পায়নি অবলা প্রাণীকুলও। সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাইদুর রহমান জানান, অতিরিক্ত ঠান্ডায় গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির মধ্যেও শীতজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাজেদুল ইসলাম জানান, জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সন্ধ্যার পর থেকে পারদ দ্রুত নামতে শুরু করছে, যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাচ্ছে।

সীমান্তবর্তী এই জনপদে এখন একটাই প্রার্থনা—এক চিলতে রোদের দেখা পাওয়া। তবে কুয়াশার পর্দার আড়ালে সূর্য কবে দেখা দেবে, সেই উত্তর আপাতত মেঘলা আকাশের কাছেই বন্দি।

এই বিভাগের আরও খবর