শীতে ফ্যাটি লিভার কমাতে ভরসা রাখুন কিছু চেনা পানীয়ে
লিভারকে ভালো রাখা ভীষণ জরুরি। অনেকেই লিভার ভালো রাখার জন্য কঠিন পথ বেছে নেন। আর হতে পারে আপনার ক্ষেত্রেও— শীতে কিছু উষ্ণ পানীয়ও লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে।
এ বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করে নিয়েছেন মুম্বাইয়ের পুষ্টিবিদ লিমা মহাজন। তিনি বলেন, লিভার ভালো না থাকলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ যথাযথভাবে বের হয় না। সেসব হরমোনও নিঃসৃত হবে না কিংবা কাজে লাগানো যাবে না, যা শরীরে শর্করা ভাঙতে এবং বিপাকের হার নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগে। আর এ প্রাথমিক কাজগুলো ব্যাহত হলেই চক্রবৃদ্ধির নিয়মে শরীরে দানা বাঁধতে শুরু করবে নানা ধরনের অসুখ।
সে কারণে শাকসবজি ও ফলের রস মিলিয়ে বানান ‘ডিটক্স ড্রিংক’। এই শীতে খুব চেনা কিছু উষ্ণ পানীয়ও লিভার ভালো রাখতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিদিন খাদ্যতালিকায় ডিটক্স ড্রিংক’ পান করুন। কারণ এটি এমন কোনো কঠিন কাজ নয়। এতে আপনার লিভার ভালো থাকবে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, কোন উষ্ণ পানীয় আপনার লিভার সুস্থ রাখবে—
গ্রিন টি
আপনার শরীরে জমা হওয়া দূষিত কণা কিংবা ফ্রি র্যাডিক্যালেই হচ্ছে ফ্যাটি লিভারের জন্য দায়ী, যা লিভারে প্রদাহ তৈরি করে ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এটি সমাধান দিতে পারে গ্রিন টি। আর গ্রিন টিতে থাকা শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যাটেসিন ওই ফ্রি র্যাডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করে এবং লিভারের কোষকে নানা ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে।
'ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল মেডিসিন'-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে— সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত গ্রিন টি খেয়েছেন, তাদের লিভারে স্নেহপদার্থ বা ফ্যাটের স্তর কম জমেছে।
কফি
কফি খাওয়া নিয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে। আবার মতও ভিন্ন থাকতে পারে। তবে প্রতিদিন এক কাপ করে কালো কফি খেলে তা লিভারের স্বাস্থ্য যে ভালো রাখতে পারে, সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। এ প্রসঙ্গে আমেরিকান লিভার ফাউন্ডেশনের পরামর্শের কথা উল্লেখ করে পুষ্টিবিদ বলছেন, ‘কফিতে রয়েছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং পলিফেনল, যা ফ্যাটি লিভারের অন্যতম কারণ প্রদাহ কমাতেও সাহায্য় করে তাকে। কফি যে ফ্যাটি লিভার কমাতে সাহায্য করেছে, তা নিয়ে বহু প্রামাণ্য গবেষণাও রয়েছে।
আদা চা
আদায় রয়েছে ৪০০-এরও বেশি জৈবসক্রিয় উপাদান এবং ৪০ রকমের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। পুষ্টিবিদ জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে হওয়া লিভারসংক্রান্ত একটি গবেষণায়, যা 'হেপাটাইটিস মান্থলি' নামের মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল, সেখানে দেখা গেছে, নিয়মিত আদা খেলে শরীরে ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্স কমে। অর্থাৎ শরীরে ইনসুলিন হরমোন তার নিজস্ব শর্করা ভেঙে শক্তিতে পরিণত করার কাজ পুরোমাত্রায় করতে পারে। শুধু তা-ই নয়, আদা প্রদাহ কমাতেও অব্যর্থ। তাই প্রতি দিন গরম চায়ে কয়েক কুচি আদা ফেলে খেলে তা প্রদাহ এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।

