একটি পরিবারের নীরব ত্যাগ
একটি পরিবারের নীরব ত্যাগ
হাবিব উন নবী খান সোহেল এই নামের পেছনে লুকিয়ে আছে এক সংগ্রামী জীবনের দীর্ঘ অধ্যায়। বিগত ২২ টি বছরের এই সময়ে তিনি হারিয়েছেন এমন অনেক কিছু, যা মুখে বলা যায় না, কথায় প্রকাশ করা যায় না।
তিনি হারিয়েছেন জীবনের অমূল্য সময়, হারিয়েছেন হাসির মানুষগুলোকে, বন্ধুদের সঙ্গ, মায়ের স্নেহ, বাবার আশ্রয়, ভাই-বোনদের ভালোবাসা সবকিছু যেন একে একে হারিয়ে গেছে তার জীবন থেকে।
জেলের চার দেয়ালের ভেতর কাটানো প্রতিটি দিন ছিল তার জীবনের একেকটি কঠিন পরীক্ষা। বাইরে তার স্ত্রী লড়াই করেছেন প্রতিদিন — একের পর এক ডিপোজিট ভেঙেছেন শুধু এই মানুষটিকে মুক্ত করতে, যাতে পরিবারটি আবার একসাথে হতে পারে।
কিন্তু সন্তানগুলো বাবাকে পায়নি।
রাতের নীরবতায় তারা কেঁদে উঠেছে “বাবা… বাবা…” বলে ডাকলেও, সেই ডাকের কোনো উত্তর আসেনি।
একজন রাজনীতিকের ত্যাগ শুধু তার নিজের নয়, পুরো পরিবারের।
যখন তাদের দল, সমাজ, কিংবা রাষ্ট্র তাদের মূল্যায়ন করতে ভুলে যায়, তখন সেই কষ্টটা বুকের গভীরে জমে থাকে — অশ্রু হয়ে নয়, নিঃশব্দ বেদনা হয়ে।
রাজনীতির মঞ্চে যে মানুষটি দেশের জন্য সবকিছু বিলিয়ে দেয়, তার ঘরে জ্বলে নিভে যাওয়া প্রদীপের আলোই বলে দেয় — ত্যাগ কতটা গভীর হতে পারে, ভালোবাসা কতটা নিঃস্বার্থ হতে পারে।
এই পরিবারটি কষ্টে থেকেও মাথা নত করেনি।
তারা জানে — সত্যিকারের সংগ্রামীদের পথ কখনোই সহজ হয় না।
কিন্তু একদিন ইতিহাস তাদের এই ত্যাগকে স্বীকৃতি দেবে — কারণ এমন মানুষ, এমন পরিবার, এমন ভালোবাসা, এমন ধৈর্য — প্রজন্মের পর প্রজন্মে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
রাশেদ উল হক সরকার

