ম্যাক অ্যালিস্টারের গোলে রিয়াল মাদ্রিদকে আবারও হারিয়ে ‘অঘটন’ লিভারপুলের
লিভারপুল বেশ বাজে সময় পার করছিল। শেষ আট ম্যাচে ছিল মোটে ২ জয়। ওদিকে বার্সেলোনাকে হারিয়ে, পরের ম্যাচে ৪ গোল করে রিয়াল মাদ্রিদ যেন উড়ছিল। সে কারণে ম্যাচটা অ্যানফিল্ডে হলেও ফেভারিট ছিল সফরকারী রিয়ালই। তবে সেই ম্যাচটা লিভারপুল জিতল, ১-০ গোলের ফল নিয়ে মাঠ ছেড়ে ঘটাল রীতিমতো ‘অঘটন’।
এই ‘অঘটনের’ কুশীলব অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। গেল বছর তার গোলেই রিয়ালকে হারিয়েছিল লিভারপুল। প্রায় এক বছর পর একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি অল রেডরা ঘটাল আবার।
রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া না থাকলে ব্যবধান আরও বড় হতে পারত। তার একের পর এক সেভ রিয়ালকে বড় হার থেকে রক্ষা করেছে।
ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আর্নল্ড ইনজুরি শেষে বদলি হিসেবে মাঠে নামেন। তাকে লক্ষ্য করে দর্শকদের কিছু কটূ মন্তব্য শোনা গেলেও, শেষ পর্যন্ত দর্শকদের উচ্ছ্বাসে ভরপুর অ্যানফিল্ডে জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে লিভারপুল।
চার ম্যাচে দুই দলের পয়েন্টই এখন সমান নয় পয়েন্ট। লিভারপুল আগের আট ম্যাচের মধ্যে ছয়টিতে হেরেছিল। তবে গত শনিবার অ্যাস্টন ভিলাকে হারিয়ে তারা কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায়।
কোচ আর্নে স্লট এবারও প্রায় একই দল নিয়েই নামেন, শুধু ফ্লোরিয়ান ভার্টজকে কোডি গাকপোর জায়গায় খেলান। দলটি পুরোনো দিনের মতো আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স দেখায়।
রিয়াল মাদ্রিদও এবারের মৌসুমে দুর্দান্ত ছিল। সাবেক লিভারপুল তারকা জাবি আলোনসোর কোচিংয়ে দলটি ২০ ম্যাচে মাত্র দুইটিতে হেরেছে। তবে এবার কোর্তোয়া না থাকলে তাদের পরিণতিও হতে পারত অ্যাটলেটিকোর বিপক্ষে ৫-২ ব্যবধানের পরাজয়ের মতোই।
২০২২ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে কোর্তোয়ার দুর্দান্ত সেভেই লিভারপুল হেরে গিয়েছিল। এবারও তিনি শুরু থেকেই ব্যস্ত ছিলেন। ফ্লোরিয়ান ভির্টজের পাস থেকে ডমিনিক শবোসলাইয়ের শট ঠেকিয়ে দেন তিনি।
পরে ভিএআর রিভিউয়ে দেখা যায়, অরলিয়েন চুয়ামেনির হাতে বল লাগলেও সেটা স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল, ফলে পেনাল্টি দেওয়া হয়নি।
শবোসলাইয়ের শক্তিশালী শটও ফেরান কোর্তোয়া। তবে প্রথমার্ধে লিভারপুলের দাপটের পর ৪৫ মিনিটে রিয়াল মাদ্রিদ প্রথমবারের মতো টার্গেটে শট নেয়। জুড বেলিংহামের শটটি ঠেকিয়ে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক গিওর্গি মামারদাশভিলি।
দ্বিতীয়ার্ধেও কোর্তোয়া ছিলেন রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য। ভার্জিল ভ্যান ডাইক ও হুগো একিটিকের হেড সেভ করেন তিনি। শবোসলাইয়ের ফ্রি-কিকও ঠেকান দারুণভাবে।
তবুও এক ঘণ্টা পর অবশেষে কোর্তোয়ার বাধা ভাঙে। শবোসলাইয়ের ফ্রি-কিক থেকে মাথা ছুঁইয়ে অ্যালেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার গোল করেন।
ম্যাচের আগে অ্যানফিল্ডের পাশে আলেক্সান্ডার-আর্নল্ডের একটি দেয়ালচিত্রে ভাঙচুর হয়। তিনি মাঠে নামলে দর্শকদের কেউ কেউ তাকে বিদ্রূপ করলেও, তার ফিরে আসা দলের জন্য মনোবল বাড়ায়।
কিলিয়ান এমবাপ্পে এবার রিয়াল মাদ্রিদের দুর্দান্ত ফর্মের অন্যতম কারণ ছিলেন। তিনি আগের ১৭ ম্যাচের মধ্যে মাত্র দুইটিতে গোল করতে পারেননি। তবে এই ম্যাচে সুযোগ পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট হন।
ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকেও ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখেন তরুণ কনর ব্র্যাডলি। ফলে রিয়াল মাদ্রিদ এই মৌসুমে প্রথমবার গোলশূন্য থাকে।
শেষ দিকে গাকপোর একটি শটও রুখে দেন কোর্তোয়া। তবে লিভারপুলের রক্ষণভাগ এবার শক্তভাবে দাঁড়িয়ে থাকে এবং মৌসুমের প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে ক্লিনশিট তুলে নেয়।

