img

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীর জামানত ব্যয় ও নির্বাচনী ব্যয় কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি। একই সঙ্গে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করেই আরপিও সংশোধন করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে দলটি।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে আয়োজিত এক বৈঠকে দলটির পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়। এ সময় আরো ৩১ দফা দাবি জানায় দলটি।

বৈঠক শেষে দলটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে টাকার প্রভাব বন্ধ করতে হবে। নির্বাচনকে অনেকে বিনিয়োগ হিসাবে দেখেন। এ প্রবণতা রোধ না করা গেলে আগামী নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কালো টাকার খেলা বন্ধ করা না গেলে নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।

তিনি আরো বলেন, ‘আরপিও চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে বসলে আরপিও নিয়ে প্রশ্ন আসবে। আর তখন আবার সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে।’

সংসদ নির্বাচনে জামানত বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করার সমালোচনায় সাইফুল হক বলেন, ‘এটা ঠিক হয়নি।

নির্বাচনী ব্যয়সীমাও ৫০ লাখ টাকা করা হয়েছে, যা দেশের বাস্তবতার বিপরীত। নির্বাচনে কালো টাকা, অবৈধ অর্থ ও মাফিয়া বন্ধ করতে না পারলে আগামী সংসদ কালো টাকার মালিকদের ক্লাবে পরিণত হবে। গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এই টাকার খেলাটা বন্ধ করা দরকার। প্রকাশ্যে, অপ্রকাশ্যে টাকার যে ছড়াছড়ি এটা বন্ধ করতে না পারলে গোটা নির্বাচনের প্রতিদ্বন্দ্বিতাই একমাত্র দুই থেকে পাঁচ শতাংশ বা ১০ শতাংশ বিত্তবানদের মধ্যে এটা কিন্তু সীমাবদ্ধ থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সিইসিকে যে কথাটা বলেছি, নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা দরকার।

রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগে আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশনের দক্ষ যে জনবল আছে সেখান থেকেও এটা নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা বিবেচনা করতে। জনপ্রশাসন ক্যাডারের পাশাপাশি অন্যান্য ক্যাডারেরও দক্ষ অভিজ্ঞ যেসব কর্মকর্তা আছেন সেখান থেকেও রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা, এগুলাকে সক্রিয়ভাবে বিবেচনার মধ্যে আনার কথা বলেছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘পোলিং অফিসার যেসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কোনো বিতর্ক নেই, কোনো প্রশ্ন নেই, যারা নানাভাবে যাদের ব্যাপারে কোনো সমালোচনা নেই, তুলনামূলকভাবে যাদের একটা নিরপেক্ষতা আছে, পেশাদারি আছে এরকম প্রতিষ্ঠান বা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আমরা মনে করি পোলিং অফিসার সেখানে নিয়োগ দেওয়া দরকার। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট যেসব মন্ত্রণালয় আছে সেগুলো কমিশনের এখতিয়ারে আসা দরকার।’

সাইফুল হক এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলো যাদের প্রতীক আছে তাদের নিজস্ব মার্কায় নির্বাচন করা উচিত। কারণ যখন একটা আলাদাভাবে  রাজনৈতিক দল আমি নিবন্ধন নিচ্ছি, যখন আমার নামের পক্ষে একটা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তখন আমার রাজনৈতিক নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে—আমার নিজের মার্কা নিয়ে নিজেকে নির্বাচন করা। সুতরাং সেটা করা উচিত। কিন্তু আমি একইসঙ্গে এটা মনে করি, এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে কিন্তু সময়টা দেওয়া দরকার। আগামী নির্বাচন ফেব্রুয়ারি মাসে, এটা পুরোপুরি (জোট করলেও ভোট নিজ প্রতীকে) এখন জারি করাটা খুব বিবেচনার কাজ হবে না। আমরা মনে করি, আগামী নির্বাচনে নিজ প্রতীকের বাইরে কেউ যদি অন্য কোনো প্রতীকে নির্বাচন করতে চান, সেই সুযোগটাও রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য রাখা দরকার। এর পরবর্তী নির্বাচনে নতুন বিধান রাখতে পারে।’

এই বিভাগের আরও খবর