দুই সেতুর জন্য ৫৪ বছরের অপেক্ষা
সিলেটের বিয়ানীবাজারে ৫৪ বছর ধরে দুই সেতুর জন্য অপেক্ষা করছে উপজেলার দুই ইউনিয়নের প্রায় ২০ হাজার মানুষ। কবে তাদের অপেক্ষার পালা শেষ হবে, তা জানাতে পারছে না কেউ।
স্থানীয়রা জানায়, বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগর ইউনিয়নের ফুলমলিক-ঘাঘুয়া গ্রামের একমাত্র সড়কটি বিভক্ত করে বয়ে গেছে খাল। শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পারাপার সম্ভব হলেও বর্ষায় তীব্র স্রোত সাঁকো ভেঙে দেয়।
এতে অসুস্থদের হাসপাতালে নিতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একই দুর্ভোগ পোহাতে হয় কৃষিপণ্য বাজারে তুলতে। স্থানীয়রা বহু বছর ধরে খালটির ওপর সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। এতে এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একপ্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আকমল আলী বলেন, ‘কয়েক মাস আগে গ্রামের এক যুবকের মৃত্যু হলে লাশ বাড়ি আনার সময় চরম সংকটের মুখোমুখি হতে হয় স্বজনদের। বাধ্য হয়ে লাশ কাঁধে করে নিতে হয়েছিল।’
স্থানীয়রা জানায়, ২০১৯ সালে কয়েক গ্রামের উদ্যোগে দেড় লাখ টাকা খরচে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু ২০২২ ও ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় সাঁকোটি ভেঙে গেলে আবারও বিপাকে পড়তে হয় গ্রামবাসীকে।
উপজেলা প্রকৌশলী দীপক কুমার দাস জানান, ২০২২ সালে অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত সেতু নির্মাণের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, অনূর্ধ্ব ১০০ মিটার সেতু নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। মেয়াদ বাড়ানো হলে জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেতুসহ মোট তিনটি সেতু প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করতে আমরা কাজ করছি।
এদিকে উপজেলার তিলপাড়া ইউনিয়নের সুনাই নদীতেও একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে তিন গ্রামের আরো প্রায় ১০ হাজার মানুষ।
একটি সেতুর অভাবে বিবিরাই, বিলবাড়ি ও কালাইম গ্রামের বাসিন্দাদের ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন পরিষদে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে নদী পারাপার হতে হচ্ছে। সুনাই নদীর ওই অংশে গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে যাতায়াতের জন্য বাঁশের সাকো নির্মাণ করেছেন।
তিলপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সুনাই নদীতে সেতু নির্মাণের ব্যাপারে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো ফল পাইনি।

