img

বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত বা ‘কুখ্যাত’ সোনার তৈরি সেই টয়লেটটি আবারও ফিরে আসছে আলোচনায়। নিউইয়র্কের নিলামঘর সদবিস গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সম্পূর্ণ সোনার তৈরি টয়লেট ‘আমেরিকা’ নিলামে তোলার কথা ঘোষণা দিয়েছে। 

১৮ ক্যারেট সোনায় তৈরি, ১০১ দশমিক ২ কিলোগ্রাম (২২৩ পাউন্ড) ওজনের ‘আমেরিকা’-নামের এই টয়লেটটি নির্মাণ করেছিলেন ইতালিয়ান শিল্পী মাউরিজিও ক্যাটেলান। 

২০১৬ সালে নিউইয়র্কের গুগেনহাইম মিউজিয়ামে প্রদর্শিত হওয়ার পর থেকেই এটি ছিল শিল্পপ্রেমীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

প্রায় এক লাখ মানুষ সেই সময় টয়লেটটি দেখতে ভিড় জমিয়েছিল।

 

তবে তিন বছর পর, ২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের ব্লেনহাইম প্যালেস থেকে চুরি যায় এটি। মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই চোরেরা হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে নিয়ে যায় পুরো সোনার টয়লেটটি। পরবর্তীতে কয়েকজনকে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও, টয়লেটটি আর কখনও উদ্ধার করা যায়নি।

ধারণা করা হয়, এটি গলিয়ে ফেলা হয়েছিল। 

 

এই ব্যঙ্গাত্মক ভাস্কর্যটি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার প্রথম দফায় ক্ষমতায় থাকাকালে ধার দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কারণ তিনি জাদুঘর থেকে একটি ভ্যান গঘ চিত্রকর্ম ধার নিতে চেয়েছিলেন।

তবে গল্প এখানেই শেষ নয়।

ক্যাটেলান নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে তিনি ‘আমেরিকা’-র একাধিক সংস্করণ তৈরি করেছেন। এরই দ্বিতীয় সংস্করণটি এবার আসছে নিলামে।

 

নভেম্বরের ১৮ তারিখ নিউইয়র্কের সদবিসে নিলামে উঠবে এই শিল্পকর্মটি। নিলামের আগে ১০ দিনের জন্য এটি নিলামঘরটির নতুন ভবনের চতুর্থ তলার বাথরুমে প্রদর্শিত হবে। তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ এবার কেউ এটি ব্যবহার করতে পারবে না।

 

 

সোথেবিজের সমসাময়িক শিল্প বিভাগের প্রধান ডেভিড গ্যালপারিন মজা করে বলেন, ‘দরজাটা খোলা থাকবে—তবে ভেতরে যাওয়া যাবে না।’

এই সোনার টয়লেটের ন্যূনতম দর নির্ধারণ করা হয়েছে তার সোনার বর্তমান বাজারমূল্যের ওপর ভিত্তি করে। অর্থাৎ, শুরু হবে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলার বা ১২২ কোটি টাকা থেকে, এবং এরপর দাম উঠবে ক্রেতাদের আগ্রহ অনুযায়ী।

গ্যালপারিন বলেন, ‘এভাবে দর নির্ধারণ আসলে কাজটির মূল ভাবনার সঙ্গেই যায়—যেখানে শিল্পের ধারণাগত মূল্য আর বস্তুগত মূল্যের পার্থক্যটি প্রকাশ পায়।’

এই টয়লেটের সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে ক্যাটেলানের আরেক আলোচিত কাজ ‘কমেডিয়ান’-এর সঙ্গে। সেই শিল্পে দেয়ালে ডাকটেপ দিয়ে লাগানো ছিল একটি কলা! গত বছর সোদবিসেই এটি বিক্রি হয়েছিল ৬ দশমিক ২৪ মিলিয়ন ডলারে। একসময় মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার ডলারে বিক্রি হওয়া সেই কলাটি বিভিন্ন প্রদর্শনীতে বহুবার খাওয়া হয়েছিল!

গ্যালপারিনের ভাষায়, “ক্যাটেলান বরাবরই শিল্পজগতের নিয়মকানুনকে ব্যঙ্গ করেছেন—যেভাবে শিল্প দেখা হয়, বিক্রি হয়, বা মূল্যায়িত হয়। ‘আমেরিকা’ সেই ব্যঙ্গকে সবচেয়ে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে।”

এই বিভাগের আরও খবর