সহপাঠীদের ‘অপ্রস্তুত’ ছবি তুলে সিনিয়র ভাইকে পাঠান বাকৃবি ছাত্রী
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) গোপনে নারী শিক্ষার্থীদের অপ্রস্তুত অবস্থার ছবি তুলে এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছে পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের এক নারী শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অনুযায়ী, ওই নারী শিক্ষার্থী তার সহপাঠীদের ঘুমন্ত বা ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি তুলে নিয়মিতভাবে তার সিনিয়র ভাইয়ের কাছে পাঠাতেন। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) অভিযোগকারীরা বিষয়টি মৌখিকভাবে অনুষদের ডিনের কাছে জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী সদ্য ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন। যিনি (সিনিয়র ভাই) ছবিগুলো গ্রহণ করতেন, তিনিও একই বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে লেকচারার হিসেবে কর্মরত আছেন।
অভিযুক্ত নারী শিক্ষার্থী অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছেন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবদুল মজিদ। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা অভিযোগ নিয়ে আমার কাছে আসে। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে ছবি আদান-প্রদানের প্রমাণ পাই। জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি স্বীকার করেন যে, তিনি মেয়েদের বিভিন্ন ছবি তুলতেন এবং তা এক সিনিয়র ভাইয়ের কাছে পাঠাতেন। বর্তমানে ওই মোবাইলটি সিলগালা অবস্থায় ডিন অফিসে সংরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ ও নিরোধ কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হবে।
অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থী স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্যে বলেন, আমি মেয়েটির সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা বলেছি। সে যেসব ছবি পাঠিয়েছে, আমি তা সংরক্ষণ করিনি। আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য ছিল না, তবে আমি আমার কাজের জন্য অনুতপ্ত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমি তা মেনে নেব।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের ভাষ্য, ইন্টার্নশিপ চলাকালে ওই শিক্ষার্থীর সন্দেহজনক আচরণ লক্ষ্য করে তারা নজরদারিতে রাখেন। পরে নিশ্চিত হন যে, তিনি মেয়েদের ঘুমন্ত বা অপ্রস্তুত অবস্থার ছবি তুলতেন। বিষয়টি প্রমাণ হওয়ার পর তারা বিভাগীয় শিক্ষকদের অবহিত করেন এবং কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

