ইসরায়েলের নারী সেনাদের যৌন হেনস্তার শিকার হচ্ছে ফিলিস্তিনি কিশোররা
একজন নারী ইসরায়েলি সৈন্য গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কর্তৃক অপহৃত দুই ফিলিস্তিনি কিশোরকে পাহারা দিচ্ছে; ওই নারী সেনা দুই কিশোরকে তাদের অন্তর্বাস পরে নাচতে বাধ্য করছে, আর সে তাদের ভিডিও রেকর্ড করছে এবং হাসছে।
অপর একটি ভিডিওতে, দুই নারী ইসরায়েলি সেনা গাজায় একজন কিশোর ফিলিস্তিনি ছেলেকে ধরে তার অন্তর্বাস খুলে ফেলে; তারা তার হাত পিছনে বেঁধে, চোখ বেঁধে, এবং তারপর তার উভয় পাশে ছবি তোলার জন্য পোজ দেয়। ডান পাশের নারীটি ছেলেটির মাথার উপরে আঙ্গুল দিয়ে বন্দুকের চিহ্ন তৈরি করার সময় ক্যামেরার দিকে তাকাচ্ছে।
অন্য ভিডিওতে, ১৬ এবং ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোর ফিলিস্তিনি ছেলেকে গাজার একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অপহরণ করে; তাদের ইসরায়েলের আটক কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে নারী ইসরায়েলি সৈন্যরা তাদের নগ্ন করে ছবি তোলে, তাদের যৌনাঙ্গ নিয়ে খেলা করে এবং মেঝেতে বেঁধে তাদের শুইয়ে রাখে।
একজন ছেলে বলে, এই অভিজ্ঞতা তার ‘মৃত্যুর চেয়েও’ খারাপ।
এই ঘটনাগুলো নারী যৌন অপরাধীর ধর্ষণকামী প্রবণতার প্রতিফলন, যারা অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের লক্ষ্য করে। অনেকেই ভাবেন, যৌন সহিংসতা বিষয়ে সবসময় নারীদের ভুক্তভোগী আর পুরুষদের শিকারী হিসেবে ভাবেন। তবে, নারীদের দ্বারা সংঘটিত যৌন নির্যাতন পুরুষ ভুক্তভোগীদের জন্য অনেক বেশি মারাত্মক।
তবে শুধু গাজাতেই নয়, ইরাকে মার্কিন-ব্রিটিশ দখলের সময়ও এমন ঘটনা ঘটেছিল। মার্কিন সামরিক তদন্তকারীরা একটি মামলা নথিভুক্ত করেছিলেন, যেখানে নারী মার্কিন সৈন্যরা আবু গারিব জেলে মুখোমুখি হাতকড়া পরা দুই নগ্ন অপ্রাপ্তবয়স্ক ইরাকি ছেলের ছবি তুলেছিল এবং হাসছিল। অপর একটি মামলায় সিরিয়ান কিশোরকে তাদের সামনে নগ্ন হতে বাধ্য করেছিল মার্কিন নারী সৈন্যরা।
এছাড়া বসরার উপকণ্ঠে ক্যাম্প ব্রেডবাস্কেটে দুই অপ্রাপ্তবয়স্ক ইরাকি ছেলেকে নগ্ন করে যৌন কার্যকলাপের অনুকরণ করতে বাধ্য করেছিল নারী ব্রিটিশ সৈন্যরাও।
গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীদের অসহায় জনগোষ্ঠীকে নির্যাতনের স্বাধীনতা দিয়েছে পশ্চিমা বিশ্ব। তাই এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, কিছু নারীর দ্বারা দুর্বল ছেলেদের ওপর যৌন নির্যাতনের এই ঘটনাগুলো সামনে এসেছে। এগুলো প্রায়ই ঘটে; যা প্রকাশ্যে আসে না।
নারীবাদী লেখক ভ্যাল ইয়ং বলেছেন, নারীরা যে পুরুষদের যৌন নির্যাতন করতে পারে এটা অনেকে ভাবনাতেই আসে না। কারণ আমাদের সমাজে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে, যৌন নির্যাতনের ঘটনা শুধু পুরুষদের দ্বারাই সংঘটিত হয়।
ইয়ং উল্লেখ করেছেন, নারী নির্যাতনকারীরা প্রায়শই অন্যদের বিরুদ্ধে তাদের ধ্বংসাত্মক আচরণকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য নারীবাদের পতাকা ব্যবহার করে। এটা খুব একটা অবাক করার মতো নয় যে, নির্যাতনকারী নারীরাই প্রথম নারীবাদকে কাজে লাগান, তাদের পছন্দের অংশগুলো বেছে নেন এবং সহযোগিতা, ব্যক্তিগত সীমানা, সমতা এবং অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধার ধারণা উপেক্ষা করেন। এখানে কেউ ইসরায়েলের নারী ক্ষমতায়ন মন্ত্রী মে গোলানের কথা স্মরণ করতে পারেন, যিনি গর্ব করে বলেছিলেন যে তিনি ‘গাজার ধ্বংসাবশেষের জন্য ব্যক্তিগতভাবে গর্বিত’ এবং ‘বর্ণবাদী হতে গর্বিত’।

