গাজার ধ্বংসস্তূপ সরাতে হুমকি ইসরায়েলের অবিস্ফোরিত বোমা
গাজা সিটির মেয়র ইয়াহিয়া আল-সাররাজ জানিয়েছেন, গাজা শহরে ভারী যন্ত্রপাতি প্রবেশে ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞা শহরের ধ্বংসস্তূপ অপসারণ ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো পুনর্গঠনের প্রচেষ্টাকে মারাত্মকভাবে ব্যাহত করছে। আর গাজা উপত্যকার সর্বত্র ছড়িয়ে থাকা ইসরায়েলের অবিস্ফোরিত বোমা এখন মানুষের জীবনের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গাজা সিটির মেয়র বলেন, ‘শহরের পানি সরবরাহ ব্যবস্থা সচল রাখা ও নতুন কূপ খননের জন্য অন্তত ২৫০টি ভারী যানবাহন এবং এক হাজার টন সিমেন্ট প্রয়োজন।’
আল জাজিরার হিন্দ খুদারি গাজার আজ-জাওয়াইদা এলাকা থেকে জানান, এত প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও মাত্র ছয়টি ট্রাক প্রবেশ করতে পেরেছে।
এখনো কমপক্ষে ৯ হাজার ফিলিস্তিনি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন। তবে নতুন করে আনা যন্ত্রপাতি মূলত ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ উদ্ধারের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, ফিলিস্তিনিদের হারিয়ে যাওয়া স্বজনদের খোঁজে নয়।
খুদারি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা জানে, ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ ফেরত না আসা পর্যন্ত যুদ্ধবিরতিতে কোনো অগ্রগতি হবে না।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে, রেডক্রসের গাড়ি হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকের পর দক্ষিণ রাফাহ এলাকায় এক ইসরায়েলি বন্দির মরদেহ উদ্ধারে গাইড হিসেবে প্রবেশ করছে।
ইসরায়েলি সরকারের এক মুখপাত্র জানান, বন্দিদের মরদেহ অনুসন্ধানের জন্য রেডক্রস ও মিসরীয় দলগুলোকে যুদ্ধবিরতির তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রমের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই রেখার ভেতর ৫৮ শতাংশ গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েল নিজের হাতে রেখেছে।
আল জাজিরার নূর ওদেহ জর্ডানের আম্মান থেকে জানান, ইসরায়েল দুই সপ্তাহ ধরে দাবি করেছিল, হামাসই সব বন্দির মরদেহের অবস্থান জানে।
তিনি বলেন, দুই সপ্তাহ পর এখন ইসরায়েল হঠাৎ করে মিসরীয় দল ও ভারী যন্ত্রপাতিকে গাজায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে, যাতে তারা বিশাল ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ভূগর্ভস্থ টানেল বা সেইসব স্থানে পৌঁছাতে পারে, যেখানে বন্দিদের আটকে রাখা হয়েছিল বা নিহত হয়েছিল।
ওদেহ আরো জানান, ইসরায়েলি হামলায় টানেলগুলো এতটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, হামাস গত দুই সপ্তাহেও সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলের এই নীতিগত পরিবর্তনের কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি,” তিনি বলেন, উল্লেখ করে যে লাল ক্রস ও হামাস উভয়কেই এখন ধ্বংসস্তূপের নিচে সম্ভাব্য কবরস্থান খুঁজে বের করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

