অস্ত্র সমর্পণে রাজি হওয়ার খবর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন : হামাস
আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস অস্ত্র সমর্পণে সম্মত হয়েছে—এমন খবরকে ‘বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনটি। রোববার (৫ অক্টোবর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হামাস স্পষ্ট করে জানায়, তারা অস্ত্র হস্তান্তর বা নিরস্ত্রীকরণের বিষয়ে কোনো আলোচনা বা সম্মতিতে পৌঁছায়নি।
তুরস্কভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে হামাস অস্ত্র জমা দিতে রাজি হয়েছে—এমন খবর ছড়িয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। এ নিয়ে হামাসের শীর্ষ নেতা মাহমুদ মারদাউই বলেন, এসব খবর ভিত্তিহীন এবং ইচ্ছাকৃতভাবে সংগঠনের অবস্থানকে বিকৃত করে জনমতকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা।
তিনি অভিযোগ করেন, কিছু গণমাধ্যম বাস্তবতা যাচাই না করেই এমন তথ্য প্রচার করছে, যা গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনা প্রক্রিয়ার ক্ষতি করতে পারে। সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মারদাউই বলেন, নিশ্চিত তথ্য ছাড়া যেন কোনো খবর প্রকাশ না করা হয়। তিনি জানান, হামাস আলোচনায় অংশ নিচ্ছে বটে, তবে তাদের পক্ষ থেকে নিরস্ত্রীকরণের মতো কোনো সিদ্ধান্ত কখনোই গৃহীত হয়নি।
এর আগে, গত ২৯ সেপ্টেম্বর ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ বন্ধে একটি ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। ওই প্রস্তাবে যুদ্ধবিরতি, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি, হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজা পুনর্গঠনের বিষয়গুলো উল্লেখ ছিল। ট্রাম্পের দাবি, হামাস এই পরিকল্পনার অধিকাংশ বিষয়ের সঙ্গে নীতিগতভাবে একমত হয়েছে এবং আলোচনার পরবর্তী ধাপে অংশ নিতে প্রস্তুত রয়েছে।
তবে হামাস জানায়, তারা পরিকল্পনার সব দিক নিয়ে এখনো অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করছে এবং কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি। বিশেষ করে নিরস্ত্রীকরণ কিংবা অস্ত্র সমর্পণের প্রশ্নে তাদের অবস্থান সুস্পষ্ট এবং তা পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত নেই।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, গাজায় তাদের অস্তিত্ব জনগণের আত্মরক্ষার অধিকার থেকে উৎসারিত, এবং তারা নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কোনোভাবেই ত্যাগ করবে না। সংগঠনটি মনে করে, এ ধরনের ভিত্তিহীন সংবাদ শুধু গাজা নয়, পুরো ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতার দাবিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার একটি কৌশল।
বিবৃতিতে হামাস বিশ্ব গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানিয়ে বলে, এমন সংকটময় সময়ে অপপ্রচার কিংবা অসমর্থিত তথ্য প্রকাশ বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

