img

মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ ফেডারেল কর্তৃত্বের অধীনে ওরেগন রাজ্যে ২০০ জন ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন। ডেমোক্র্যাট-শাসিত এই রাজ্য তাৎক্ষণিকভাবে ফেডারেল আদালতে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ন্যাশনাল গার্ড যুক্তরাষ্ট্রের একটি রিজার্ভ সামরিক বাহিনী, যা প্রয়োজনে অভ্যন্তরীণ জরুরি পরিস্থিতি যেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা নাগরিক অস্থিরতায় এবং বিদেশে সামরিক অভিযানে সহায়তা করে।  

হেগসেথ স্বাক্ষরিত এবং রাজ্যের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তার উদ্দেশ্যে প্রেরিত একটি স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, ‘সেনাদের অবিলম্বে ৬০ দিনের জন্য ফেডারেল সার্ভিসে ডাকা হবে।

 

’  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাজ্যের রাজধানী ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত পোর্টল্যান্ডে’ সেনা পাঠাতে চান বলে ঘোষণা করার একদিন পরই এই ঘোষণা এসেছে।

 

তবে ওরেগনের গভর্নর টিনা কোটেক রবিবার এক বিবৃতিতে জানান, তিনি রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলাপে এই মোতায়েনের বিরোধিতা করেছেন। কোটেক বলেন, ‘ওরেগন আমাদের বাড়ি—কোনো সামরিক লক্ষ্যবস্তু নয়।’ রাজ্য কর্মকর্তারা স্মারকলিপিটি পাওয়ার পরপরই ডেমোক্র্যাটিক অ্যাটর্নি জেনারেল ড্যান রেফিল্ড পোর্টল্যান্ডের ফেডারেল আদালতে হেগসেথ, ট্রাম্প এবং মার্কিন স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নোয়েমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা যা দেখছি তা জননিরাপত্তার বিষয় নয়। এটি আইন-শৃঙ্খলার আড়ালে রাষ্ট্রপতির রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা।’

যদিও স্মারকলিপিতে নির্দিষ্টভাবে পোর্টল্যান্ডের নাম উল্লেখ করা হয়নি, তবে শনিবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলেন, তিনি নোয়েমের অনুরোধে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত পোর্টল্যান্ড এবং কোনো আইসিই সুবিধাকে অ্যান্টিফা ও অন্যান্য দেশীয় সন্ত্রাসীদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় সেনা পাঠানো হয়।’

আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের অধীনে কাজ করে।

 

ট্রাম্প আরো বলেন, ‘প্রয়োজনে আমি ফুল ফোর্স অনুমোদন করছি।’ ট্রাম্প প্রশাসন অ্যান্টিফা নামের ফ্যাসিবাদ-বিরোধী ঢিলেঢালা আন্দোলনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিলেও, যুক্তরাষ্ট্রের কেটো ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী ২০২০ সাল থেকে দেশে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খুনের ৫৪ শতাংশের জন্য ডানপন্থীরা দায়ী, যা বামপন্থীদের দায়ের দ্বিগুণেরও বেশি।

 

ট্রাম্পের ঘোষণার কয়েক দিন আগে টেক্সাসের একটি আইসিই কেন্দ্রে হামলায় একজন বন্দি নিহত এবং দুইজন গুরুতর আহত হন। ট্রাম্প কোনো প্রমাণ ছাড়াই এই হামলার জন্য ‘উগ্র বামপন্থীদের’ দায়ি করেন।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে ট্রাম্প ডেমোক্র্যাট-নিয়ন্ত্রিত একাধিক রাজ্য ও শহরে সেনা মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন।

 

সম্প্রতি তিনি টেনেসির মেমফিস ও ইলিনয়ের শিকাগোতে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে ওয়াশিংটন ডিসি ও ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসেও সেনা মোতায়েন করা হয়।

 

কঠোর ব্যবস্থা সত্ত্বেও আইসিই সুবিধার বাইরে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। সমর্থকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন নির্বাসন প্রক্রিয়া বাড়ানোর পাশাপাশি মানুষকে অবমাননাকর ও জনাকীর্ণ অবস্থায় আটকে রাখছে। পোর্টল্যান্ডের একটি আইসিই ভবনের বাইরে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হন। 

কেউ কেউ উজ্জ্বল পোশাক পরে অংশ নেন। দ্য ওরেগনিয়ান সংবাদপত্র জানিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় শহরের ফেডারেল ভবনের বাইরে ১০০ জনেরও কম লোক বিক্ষোভে অংশ নিলেও আগে থেকেই জনতা ছত্রভঙ্গ হতে শুরু করেছিল। পত্রিকাটি আরও জানায়, জুন মাস থেকে ফেডারেল অফিসাররা ফেডারেল ভবনের বাইরে দুই ডজনেরও বেশি লোককে গ্রেপ্তার করেছেন। তবে এসব গ্রেপ্তার মূলত ট্রাম্পের অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভের প্রথম দিকে ঘটে।

সূত্র : রয়টার্স

এই বিভাগের আরও খবর


সর্বশেষ