ভারতের ছত্তিশগড়ে ২১ নারীসহ ৭১ মাওবাদীর আত্মসমর্পণ

ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের দান্তেওয়াড়া জেলায় বুধবার মোট ৭১ জন মাওবাদী আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের মধ্যে ৩০ জনের মাথায় মোট ৬৪ লাখ রুপি পুরস্কার ঘোষিত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। দান্তেওয়াড়ার পুলিশ সুপার গৌরব রাই জানিয়েছেন, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে ২১ জন নারী।
এ ছাড়া ১৭ বছরের এক কিশোর এবং ১৬ ও ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরীও রয়েছে।
তারা সবাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সিআরপিএফের (কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী) কর্মকর্তাদের সামনে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি জানান, মাওবাদীরা মাওবাদী মতাদর্শে হতাশ হয়ে এবং বস্তার রেঞ্জ পুলিশের পুনর্বাসন কর্মসূচি ‘লন ভারাত্তু’ ও ‘পুনা মারগেম’ এবং ছত্তিশগড় সরকারের নতুন আত্মসমর্পণ ও পুনর্বাসন নীতিতে অনুপ্রাণিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেছে।
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছেন বামন মাড়কম (৩০) ও মানকি ওরফে সামিলা মণ্ডাভি (২০)। তাদের প্রত্যেকের মাথার দাম ছিল ৮ লাখ রুপি।
এ ছাড়া শ্যামিলা ওরফে সোমলি কাওয়াসি (২৫), গঙ্গি ওরফে রোহিনি বারসে (২৫), দেবে ওরফে কবিতা মাদভি (২৫) এবং সান্তোষ মণ্ডাভির (৩০) মাথার দাম ছিল ৫ লাখ রুপি করে। এ ছাড়া একজনের নামে ৩ লাখ, ছয়জনের নামে ২ লাখ করে, নয়জনের নামে ১ লাখ করে এবং আটজনের ৫০ হাজার রুপি করে পুরস্কার ঘোষণা করা ছিল। কেউ যদি তাদের ধরিয়ে দিতেন তাহলে ওই ব্যক্তিদের এই পুরষ্কার দেওয়া হতো।
পুলিশের দাবি, বামন, শ্যামিলা, গঙ্গি ও দেবে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর একাধিক হামলায় জড়িত ছিল।
বাকিরা সড়ক খোঁড়া, গাছ কাটা, মাওবাদীদের পোস্টার, ব্যানার ও লিফলেট ছড়ানোর মতো কাজে যুক্ত ছিল। এই আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ২০২০ সালের জুনে শুরু হওয়া ‘লন ভারাত্তু’ অভিযানের আওতায় দান্তেওয়াড়া জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ১১৩ জন মাওবাদী সহিংসতা ছেড়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। আত্মসমর্পণকারীদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার রুপি করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং সরকারি নীতি অনুযায়ী তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সম্প্রতি ছত্তিশগড়ের নারায়ণপুর জেলায় অভিযানে নিহত দুই শীর্ষ মাওবাদী নেতা সংগঠনের সামরিক ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় মূল ভূমিকা পালন করতেন। তাদের মৃত্যুর ফলে সিপিআই (মাওবাদী)-এর দুর্বল কাঠামোয় বড় ধাক্কা লেগেছে।
গত সোমবার আবুজমাড়ের ফারাসবেদা ও টয়মেটা গ্রামের জঙ্গলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে রামাচন্দ্র রেড্ডি ওরফে রাজু দাদা (৬৩) এবং কাদারি সত্যনারায়ণ রেড্ডি ওরফে কোসা দাদা (৬৭) নিহত হন। দুইজনেই সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।
সূত্র : এনডিটিভি।