সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিনকে কারাগারের চিকিৎসা বিভাগে স্থানান্তর

থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে তার বয়স ও দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে সোমবার কারাগারের চিকিৎসা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারা বিভাগের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে থাইল্যান্ডের সুপ্রিম কোর্ট ৭৬ বছর বয়সী থাকসিনকে এক বছরের কারাদণ্ড দেন। আদালত রায় অনুযায়ী, তিনি ২০২৩ সালের সাজা কারাগারের সেলে নয়, বরং হাসপাতালের একটি বিশেষ কক্ষে থেকে ভোগ করেছেন, যা অনিয়ম।
টেলিযোগাযোগ ব্যবসার এই ধনকুবের থাইল্যান্ডের অন্যতম ধনী ও বিভাজন সৃষ্টিকারী রাজনীতিবিদ, যিনি দুই দশক ধরে রাজতন্ত্রপন্থী ও সামরিকপন্থী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে জড়িত একটি রাজবংশের প্রধান। তবে তার রাজনৈতিক প্রভাব এখন হ্রাস পাচ্ছে। গত মাসে তার মেয়ে পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে আদালতের আদেশে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং বর্তমানে থাকসিনকে ব্যাঙ্ককের ক্লং প্রেম কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।
এক জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বয়স ও দীর্ঘস্থায়ী রোগের কারণে থাকসিনকে চিকিৎসা বিভাগে নেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি চিকিৎসাধীন নাকি সতর্কতার অংশ হিসেবে স্থানান্তরিত হয়েছেন, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাননি।
এদিকে থাকসিন সোমবার কোয়ারেন্টিন শেষ করার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন, তার মা ও বড় বোন প্রথম দর্শনার্থীদের মধ্যে ছিলেন। প্রায় ৩০ মিনিটের সাক্ষাৎ শেষে পেতংতার্ন সাংবাদিক ও জেলগেটে অপেক্ষমাণ সমর্থকদের জানান, নিয়ম মেনে তার বাবার মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভালো।
রক্তচাপের কিছু সমস্যা আছে, তবে কারাগারে যারা থাকেন তাদের জন্য এটি স্বাভাবিক, কারণ সবারই মানসিক চাপ থাকে।’
এএফপির তথ্য অনুসারে, থাকসিন ২০০১ ও ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তবে দ্বিতীয় মেয়াদ সামরিক অভ্যুত্থানে শেষ হয়, আর তিনি নির্বাসনে চলে যান। ২০২৩ সালের আগস্টে দেশে ফেরার পর তাকে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে আট বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তিনি কোনো দিন কারাগারের সেলে থাকেননি, বরং হাসপাতালে বিশেষ কক্ষে ছিলেন।
পরে রাজকীয় ক্ষমায় শাস্তি কমিয়ে এক বছর করা হয় এবং বয়স্ক বন্দিদের জন্য প্রারম্ভিক মুক্তি প্রকল্পের আওতায় ছাড়া পান।
অন্যদিকে তার আইনজীবী উইনিয়াত চাটমন্ট্রি সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে কারাগারের বাইরে শাস্তি ভোগের আবেদন করার সময় হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় কারাগারে থাকতে হয়, এরপর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া থাকসিনও কোনো বিশেষ সুবিধা চাননি, নিরাপত্তাব্যবস্থা কিংবা বিশেষ কক্ষ—কোনো বিশেষ সুযোগ-সুবিধাই নেই তার জন্য।