img

সুদানের দক্ষিণে রবিবার আধাসামরিক বাহিনী একাধিক ড্রোন হামলা সেনাবাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান ও বেসামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। এক সেনা কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। এর ঠিক এক সপ্তাহ আগে রাজধানীতেও একই ধরনের হামলা হয়েছিল।

২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে সুদান একটি ভয়াবহ যুদ্ধে জড়িয়ে আছে, যেখানে সরকারি সেনাবাহিনী লড়ছে আধাসামরিক র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) বিরুদ্ধে।

 

এ যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ নিহত হয়েছে এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

 

নাম না প্রকাশের শর্তে ওই কর্মকর্তা জানান, রবিবারের হামলার লক্ষ্য ছিল সুদানি সেনাবাহিনীর ১৮তম ডিভিশনের সদর দপ্তর ও জ্বালানি মজুদের জায়গা, যা হোয়াইট নাইল রাজ্যে নীল নদের পশ্চিম তীরে সেনানিয়ন্ত্রিত শহর কস্তির পূর্ব দিকে অবস্থিত। একই সঙ্গে কস্তির দক্ষিণ-পূর্বে কেনানা বিমানঘাঁটি ও বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া শহরের পূর্ব দিকে উম দাবাকির বিদ্যুৎকেন্দ্রও লক্ষ্যবস্তু হয় বলে ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

 

এ হামলার দায় তাৎক্ষণিকভাবে কেউ স্বীকার করেনি এবং ক্ষয়ক্ষতির মাত্রাও স্পষ্ট নয়। খার্তুম থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কস্তির বাসিন্দারা জানান, হামলার সময় প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

অন্যদিকে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র জানান, স্থানীয় সময় শনিবার ভোরে উত্তর কোরদোফান রাজ্যের রাজধানী এল-ওবেইদে বিভিন্ন স্থাপনায় আধাসামরিক বাহিনী একাধিক ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে সেনাবাহিনীর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এসব ড্রোন প্রতিহত করেছে।

 

এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে সেনা মুখপাত্র নির্দিষ্ট করে জানাননি কোন কোন স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল।

 

সাম্প্রতিক এই হামলাগুলোর কয়েক দিন আগেই আরএসএফ খার্তুমসহ আশপাশের অঞ্চলে একাধিক ড্রোন হামলা চালায়। ওইসব হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বিদ্যুৎকেন্দ্র, তেল শোধনাগার, অস্ত্র কারখানা ও বিমানঘাঁটি। পরে আরএসএফের তথাকথিত তাসিস প্রশাসন সেই হামলার দায় স্বীকার করে, যারা আধাসামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে নিজেদের শাসক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ঘোষণা করেছে।

 

তারা এগুলোকে ‘নির্ভুল ও সফল বিমান হামলা’ বলে বর্ণনা করে।

 

মার্চে সেনাবাহিনী রাজধানী পুনর্দখল করার পর থেকে আরএসএফ ক্রমশ ড্রোন ব্যবহার করে সেনানিয়ন্ত্রিত এলাকায় হামলা চালাচ্ছে। এগুলোর বেশির ভাগই গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো লক্ষ্য করে পরিচালিত হচ্ছে, ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে লাখো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

এদিকে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চেষ্টার উদ্যোগ এখন পর্যন্ত ব্যর্থ হয়েছে। সেনাসমর্থিত সুদানি সরকার শনিবার চার প্রভাবশালী বিদেশি শক্তির নতুন শান্তি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর প্রস্তাব দিয়েছিল, মানবিক যুদ্ধবিরতির পর স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ধাপে ধাপে বেসামরিক শাসনের দিকে এগোনোর।

এ প্রস্তাবে আরো বলা হয়েছিল, যুদ্ধ পরবর্তী রাজনৈতিক পরিবর্তনে কোনো পক্ষই অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। কিন্তু সরকার দ্রুতই এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

বর্তমানে সুদানের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দেশটি কার্যত বিভক্ত হয়ে গেছে—উত্তর, পূর্ব ও মধ্যাঞ্চল সেনার নিয়ন্ত্রণে, আর দক্ষিণের কিছু অংশ ও পশ্চিম দারফুরের প্রায় পুরোটাই আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে।

এই বিভাগের আরও খবর


সর্বশেষ