আদালত অবমাননা করে শিল্পকলায় কাজে যোগদান এবং সরকারি টাকা আত্মসাত

অনিয়মে কাজে যোগদান এবং কোথাও কোন কাজ না করেই সরকারের ৯২,০০০০০ ( বিরানব্বই লক্ষটাকা ) তুলে নিয়েছেন। যেখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা কর্মচারীরা মামলায় জিতাও কোন অর্থ সুবিধা পাননি সেখানে এহসান কিভাবে মামলায় হেরেও এতো এতো টাকা কিভাবে পেলেন?
শেখ মুহাম্মদ এহসানুর রহমানের আর্থিক সুযোগ সুবিধা প্রদানে অনিয়ম।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ১৭ এপ্রিল ২০১৪ এ শেখ মুহাম্মদ এহসানুর রহমানকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কালচারাল অফিসার হিসাবে বদলি করে এবং একই পত্রে ২১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ অপরাহ্নে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে অবমুক্ত করা হয়। বদলী আদেশে অবমুক্তির বিষয় উল্লেখ থাকলেও তিনি তা অনুসরণ না করে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে থাকেন। কর্তৃপক্ষ ০১ মে ২০১৪ তারিখ হতে তাকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা থেকে বিরত রাখলে ০৪ মে ২০১৪ তারিখে তিনি উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন দায়ের করেন ০৫ মে ২০১৪ তারিখ মহামান্য উচ্চ আদালত বদলী আদেশের বিরুদ্ধে স্থিতাবস্থা ০৩ (তিন) মাসের (Status Quo) জারি করে এবং তাকে পদ পদবিসহ বহাল রাখার আদেশ প্রদান করেন।
উচ্চ আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে তিনি একাডেমিতে যোগদানের আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তাতে সাড়া না দিয়ে আদালতের রায়ের বিপরীতে মামলায় অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে একাডেমির ১২২তম পরিষদ সভায় মামলা চূড়ান্ত নিস্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ নেই মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
মামলাটির শুনানী শেষে ৩০/০৪/২০২৩ইং তারিখে আদালত স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে রিট পিটিশন খারিজ করে রায় প্রদান করে। তিনি ৩০/০৯/২০২৩ তারিখে আপীল দায়ের করেন। শুনানী শেষে উচ্চ আদালত কর্তৃক মামলাটির বিষয়ে চূড়ান্ত নিস্পত্তি সংক্রান্ত ৩১-০৮-২০২৪ তারিখের স্বাক্ষরিত আদেশে মামলার মেরিট না থাকায় (Status Quo) আদেশ খারিজ করে প্রত্যাহারপূর্বক মামলার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেয়। ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাতেই তার বদলী আদেশ ও অবমুক্তি বহাল থাকে। এতেকরে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ১৭ এপ্রিল ২০১৪ এর বদলী আদেশ বহাল হয়ে যায়। যেহেতেু তিনি মামলা করার আগেই অবমুক্তি মর্মে বিবেচিত এবং মামলায় পরাজিত হয়েছেন বিধায় আদালতের চূড়ান্ত রায় প্রমাণ করে শেখ মুহাম্মদ এহসানুর রহমানের বদলী আদেশ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আইন অনুযায়ী বিধি সম্মত। এ অবস্থায় ২১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ অপরাহ্নে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে তাকে অবমুক্ত করার পর থেকে তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা কালচারাল অফিসার হিসাবে গণ্য হন। ২৯-১০-২০২৪ তারিখে তিনি কর্তৃপক্ষের আদেশক্রমে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রধান কার্যালয়ে যোগদান করেন।
এ অবস্থায় তিনি অফিস আদেশ অমান্য করে অবমুক্তির আদেশ ২১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ অপরাহ্নে হতে যোগদানের পূর্বদিন ২৮ অক্টোবর ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩,৮৩৭ (তিন হাজার আটশত সাইত্রিশ) দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকেছেন। তার এই দীর্ঘতম অনুপস্থিতির বিষয়ে একাডেমি কোন বিশ্লেষণ না করে সকল আর্থিক সুযোগ সুবিধা প্রদান করেছে যা বিধি সম্মত হয়নি।
শেখ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান, ইন্সট্রাক্টর নাট্যকলা
1. ১৭ এপ্রিল ২০১৪ এর বাশিএ/প্রশা: (সংস্থাপন)/০১ (খ)/৮০/পার্ট-৪/১৩৫৯(১-২৭) সংখ্যক পত্রে জেলা শিল্পকলা একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সমমানের পদ “জেলা কালচারাল অফিসার হিসাবে বদলি করা হয়।
2. একই পত্রে ২১ এপ্রিল ২০১৪ তারিখ অপরাহ্নে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি থেকে অবমুক্ত করা হয়।
3. বদলী আদেশে অবমুক্তির বিষয় উল্লেখ থাকলেও তিনি এ আদেশ অনুসরণ না করে চলমান এপ্রিল মাসে হাজিরা খাতায় নাম থাকায় তিনি স্বাক্ষর প্রদান করেন।
4. ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কালচারাল অফিসার হিসাবে যোগদান না করায় এক পর্যায়ে অর্থ শাখা ০১ মে ২০১৪ থেকে তার বেদন ভাতাদি বন্ধ রাখে। অবমুক্তির আদেশ থেকে বেতন বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ঢাকা কর্যালয়ের বিধি বহি:র্ভূত 09 (নয়) দিনের বেতন ভাতাদি গ্রহণ করেন।
5. ০৪ মে ২০১৪ তারিখে শেখ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন নং ৪২৬৭/২০১৪ দায়ের করেন। আদালত স্থগিতাদেশ দেয়।
6.শুনানী শেষে ৩০.০৪.২০২৩ইং তারিখে আদালত স্থগিতাদেশ তুলে নিয়ে রিট পিটিশন খারিজ করে রায় প্রদান করে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বদলী আদেশ বহাল থাকে।
7. উক্ত রায়ের বিরুদ্ধে শেখ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান ৩০০৯/২০২৩ আপীল দায়ের করেন। আপীল বিভাগে উক্ত আপীল শুনানী শেষে ২৯.০১.২০২৪ইং তারিখে আপীল খারিজ করে রায় দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বদলী আদেশ ও অবমুক্তি বহাল থাকে।
8. শেখ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান 28/03/2024 তারিখে যোগদানের আবেদন করলে তা গৃহিত হয়।
9. অবমুক্তির তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৪ হতে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্প্রতি যোগদানের তারিখ 28/03/2024 পর্যন্ত তিনি ০৯ বছর ১১ মাস ০৭দিন বিধিবহি:র্ভূতভাবে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার হিসাবে বেতন ভাতাদি গ্রহণ করেছেন। 10. বদলী আদেশ অনুযায়ী তার কর্মস্থল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এ আদেশ তার মনোপূত না হলে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া যোগদান না করে মামলা করেন। নিয়ম অনুযায়ী তিনি যোগদান করে মামলা করবেন এটাই নিয়ম। মামলায় জয়ী হলে কর্তৃপক্ষ তাকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যোগদানের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকতো। তিনি যোগদান না করে বিধিবহি:র্ভূতভাবে ০৯ বছর ১১ মাস ০৭দিন অনুপস্থিত থেকেছেন যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার এই অনুপস্থিতিজনিত বিষয়ে আইনি পরামর্শ থাকলেও বিধি মোতাবেক কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
11. এ অবস্থায় শেখ মোহাম্মদ এহসানুর রহমানের অনুপস্থিতিজনিত বিষয়ে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ না করে কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঢাকার হিসাবে বেতন ভাতাদি পরিশোধ বিধিসম্মত হয়নি। এতেকরে সরকার শেখ মোহাম্মদ এহসানুর রহমান ইন্সট্রাক্টর (নাট্যকলা), এর সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। সেই সাথে সরকার আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।