সার্বিয়ায় সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সংঘর্ষ, আটক বহু

সার্বিয়ার নোভি সাদ শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ থেকে ৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ ভিড় ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করেছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে কয়েক হাজার মানুষ নোভি সাদে জড়ো হয়ে আগাম নির্বাচনের দাবিতে সমাবেশ করে।
এটি ছিল সার্বিয়াজুড়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া বিক্ষোভের সর্বশেষ পর্ব, যা গত নভেম্বর মাসে শহরের উত্তরাঞ্চলীয় রেলস্টেশনের ছাদ ধসে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পর শুরু হয়। সে দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছিল, যার জন্য ব্যাপকভাবে দীর্ঘদিনের দুর্নীতিকে দায়ী করা হয়। স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ধীরে ধীরে আগাম নির্বাচনের দাবিতে রূপ নেয়।
‘শিক্ষার্থীদের একটাই জরুরি দাবি : নির্বাচন দিতে হবে’—শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের বহন করা বড় একটি ব্যানারে এমন লেখা ছিল।
বক্তৃতা শেষে বিক্ষোভকারীরা শহরের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দিকে মিছিল করে যায়, যেখানে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে। এর আগে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে আগুন ও বোতল ছুড়ে মারে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা বেটা।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আরটিএসকে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভিকা দাচিচ বলেন, ‘বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক ও নৃশংস হামলায়’ ১৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং ৪২ জনকে আটক করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দর্শন অনুষদের সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর, আগুন ও লাঠি ছুড়ে মেরেছে।
মন্ত্রী জোর দিয়ে আরো বলেন, পুলিশের ওপর সহিংসতা ছিল ‘ভয়াবহ ও সুস্পষ্টভাবে পরিকল্পিত’, যা ‘রাজনৈতিকভাবে উত্তেজনা উসকে দিতে’ ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে প্রায় প্রতিদিনের বিক্ষোভ প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে, যা সাধারণত শান্তিপূর্ণভাবেই চলে এসেছে। তবে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে তা সহিংসতায় রূপ নেয়, যার জন্য বিক্ষোভকারীরা সরকারি সমর্থক ও পুলিশের কঠোর কৌশলকে দায়ী করে। অন্যদিকে সরকারি পক্ষ বর্বরতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। যদিও ভিডিওতে দেখা গেছে, নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের পেটাচ্ছে পুলিশ এবং আটক অবস্থায় কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগও উঠেছে।
ভুচিচ শুক্রবার রাতে অভিযোগ করেন, বিক্ষোভকারীরা সার্বিয়ার ‘স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তাকে হুমকি দিতে’ এবং ‘নোভি সাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণ দখল করতে’ চেয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘সার্বিয়ার জনগণকে জানতে হবে, রাষ্ট্র সবার চেয়ে শক্তিশালী...এবং সেটি সব সময় সত্য থাকবে।’
সার্বিয়াজুড়ে রবিবার সরকারপন্থী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। বিক্ষোভের কারণে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং তার সরকারের পতন ঘটেছে। তবে ভুচিচ এখন পর্যন্ত আগাম নির্বাচনের দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন এবং অভিযোগ করেছেন, এই বিক্ষোভ একটি বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ, যাতে লক্ষাধিক মানুষ অংশ নিয়েছে।