img

গাজার এক ফিলিস্তিনি নারীকে মৃত ঘোষণার এক বছর পর তাকে ইসরায়েলের কারাগারে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। ওই নারীকে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়েছিল বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মিডল ইস্ট আই।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিসান ফাদল মুহাম্মদ ফায়্যাদ নামে ওই নারীর পরিবারের কাছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ লাশ, কাপড় ও সরকারি পরিচয়পত্র পাঠালে তিনি আটক অবস্থায় মারা গেছে বলে মনে করা হয়েছিল।

প্যালেস্টাইনিয়ান সেন্টার ফর দ্য মিসিং অ্যান্ড ফোর্সিবলি ডিসঅ্যাপিয়ারড (পিসিএমএফডি) সোমবার জানিয়েছে, লাশ দাফনের কয়েক মাস পর, ২০২৫ সালের ২১ মার্চ তার পরিবারকে ফোন করে জানানো হয়, তিনি ইসরায়েলি হেফাজতে এখনো জীবিত আছেন।

 

তারপর থেকেই তার পরিবার আটককেন্দ্রে তার অবস্থার বিষয়ে আরো তথ্য জানার চেষ্টা করছে।

 

ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ রবিবার নিশ্চিত করেছে, ফায়্যাদ এখনো জীবিত আছেন। তবে তিনি একটি স্পাইনাল চোটের কারণে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, যা তাকে আংশিক পঙ্গুত্বে ফেলেছে।

পিসিএমএফডি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, ‘এ ঘটনা ইসরায়েলি কারাগারে নিখোঁজ ও জোরপূর্বক অদৃশ্য হওয়া হাজার হাজার ফিলিস্তিনিদের বৃহত্তর ট্র্যাজেডির একটি দিককে তুলে ধরে।

 

তাদের পরিবারগুলো সন্তানদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানার সবচেয়ে মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত এবং আশা-হতাশা, হারানো ও অপেক্ষার মধ্যে জীবনযাপন করছে।’

 

মানবাধিকার সংস্থাটি ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ‘বন্দি ফায়্যাদের ভবিষ্যৎ কী হবে প্রকাশ করা হয়, তার মুক্তি নিশ্চিত করা হয় ও তার যথাযথ চিকিৎসা করা হয়।’ সেইসঙ্গে জোরপূর্বক নিখোঁজ হওয়া জীবিত বা আটকের সময় নিহত সব বন্দির তথ্য প্রকাশ করা হয়।

পিসিএমএফডি উল্লেখ করেছে, ফায়্যাদের অবস্থার এ প্রকাশ ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের ফিলিস্তিনি আটক ব্যক্তিদের দেহ ও পরিচয় নিয়ে হস্তক্ষেপকেও প্রতিফলিত করে।

 

সংস্থাটির মতে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে নথিপত্র মিলিয়ে দেয় ও পচে যাওয়া দেহের সঙ্গে সংযুক্ত করে, যাতে সঠিকভাবে শনাক্ত করা কঠিন হয়।

 

এ ছাড়া তারা আহ্বান জানিয়েছে, যার দেহ ফায়্যাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল ও দাফন করা হয়েছিল সেই অজ্ঞাত নারীর সঠিক পরিচয়ও নিশ্চিত করা হোক।

৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে গাজা উপত্যকাজুড়ে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষের ধারণা অনুযায়ী অন্তত ১১ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ রয়েছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু। এদের মধ্যে অনেককে ধ্বংসস্তূপের নিচে দাফন করা হয়েছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আটক করেছে বা অন্য কারণে অদৃশ্য হয়েছে।

 

 

এদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলি কারাগারে ফিলিস্তিনি আটক ব্যক্তিদের প্রতি দমনমূলক আচরণ তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে গ্রেপ্তার, আটককালে মৃত্যু ও নির্যাতনের অভিযোগ সর্বকালের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এই বিভাগের আরও খবর