উত্তরাখণ্ডের আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সেনাবাহিনীর ঘাঁটি, নিখোঁজ ৯ সেনা

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর হারশিল এলাকায় মঙ্গলবার দুপুরে আকস্মিক ভারি বৃষ্টির (ক্লাউডবার্স্ট) ফলে ভয়াবহ বন্যা ও ধসের সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৯ জন সেনা সদস্য নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই খবর বলা হয়েছে। তবে সেনাবাহিনী ১১ জন নিখোঁজ থাকার কথা বলেছে।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে ধারালি গ্রামের কাছে এই ঘটনা ঘটে, যা হারশিলের সেনাঘাঁটি থেকে মাত্র ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘ইউনিটের ঘাঁটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও এবং ১১ জন সদস্যের নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও দলটি নিরলসভাবে উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে তাদের দৃঢ় মনোবলই ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রকৃত চেতনার প্রতিফলন – সাহসী, আত্মত্যাগী এবং জাতির সেবায় সদা প্রস্তুত।’
ধারালি হচ্ছে গঙ্গোত্রী যাত্রাপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
যেখানে বহু হোটেল, রেস্তোরাঁ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, খীরগঙ্গা নদীর উজানে ভারী বৃষ্টির ফলে আকস্মিক প্রবল জলস্রোত নামে নিচু এলাকায়।
এই ঘটনায় মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে সেনাবাহিনী দ্রুত ১৫০ জন সদস্যকে মোতায়েন করে। তারা সঙ্গে সঙ্গে দুর্গত গ্রামবাসীদের উদ্ধার এবং জরুরি সহায়তা প্রদান শুরু করে।
তবে বিকেল ও সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাতে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘পরিস্থিতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ধারালি (উত্তরকাশী) অঞ্চলে মেঘভাঙা বৃষ্টির কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধার ও ত্রাণকাজ চালাচ্ছে।’
উত্তরাখণ্ডের প্রধান সচিব আর. কে. সুধাংশু জানান, এই দুর্যোগে ৪০ থেকে ৫০টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহার করাও সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ৪জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ৬০ থেকে ৭০ জন নিখোঁজ রয়েছে। ভারতের হিমালয় অঞ্চলকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। যেখানে বৃষ্টি, হঠাৎ বন্যা, অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত এবং ধসের মতো ঘটনাগুলো ক্রমবর্ধমান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আরো বেশি ঘন ঘন ঘটছে।
সূত্র : এনডিটিভি।