সাফল্য দেখাতে নির্বাচনের আগেই ‘গোল্ডেন ডোম’ পরীক্ষার পরিকল্পনা

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ‘গোল্ডেন ডোম’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার প্রথম বড় ধরনের পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২০২৮ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে এবং এর নাম হবে এফটিআই-এক্স, যার পুরো অর্থ ফ্লাইট টেস্ট ইন্টিগ্রেটেড।
ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘তারা (হোয়াইট হাউস) নভেম্বরের (২০২৮) নির্বাচনে দেখানোর মতো একটি সাফল্য চায়। আর প্রতিরক্ষা দপ্তর এমন যেকোনো কিছু এড়াতে চায়, যা এই প্রকল্পকে বিলম্বিত করতে পারে।’
এই পরীক্ষায় গোল্ডেন ডোম সিস্টেমের একাধিক অংশ, সেন্সর, ইন্টারসেপ্টর ও কমান্ড প্রযুক্তি সমন্বিতভাবে আসন্ন হামলা প্রতিরোধে কাজ করবে। পুরো প্রকল্পটির নেতৃত্ব দিচ্ছে মিসাইল ডিফেন্স এজেন্সি (এমডিএ)।
এই সময়সীমা সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক ঘোষণার সঙ্গেও মিলে যায়। গত মে মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিন বছরের মধ্যে এই সিস্টেম নির্মাণ শেষ করা হবে।
তখন তিনি বলেছিলেন, ‘পুরোপুরি নির্মাণ সম্পন্ন হলে গোল্ডেন ডোম বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে পারবে।’
তবে সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই তিন বছরের সময়সীমা অত্যন্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষী। যুক্তরাষ্ট্র বহু দশক ধরে মহাকাশভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণা করলেও এখনো তা বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘এটা এখনো কঠিন একটি প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
এই ব্যবস্থাকে কার্যকর করতে যত উপগ্রহ প্রয়োজন হবে, তা অত্যন্ত বেশি হতে পারে—বিশেষ করে পুরো মার্কিন মূল ভূখণ্ড কভার করতে হলে।’
মে মাসে ট্রাম্পের মনোনীত জেনারেল মাইকেল গেটলাইন, যিনি গোল্ডেন ডোম প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সম্প্রতি এক সম্মেলনে জানান, মহাকাশভিত্তিক ইন্টারসেপ্টরকে প্রগ্রামই প্রকল্পের সবচেয়ে বড় প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জ। ‘প্রযুক্তিটি বিদ্যমান’ জানিয়ে তিনি আরো বলেন, কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে, এর খরচ, ব্যাপক উৎপাদনযোগ্যতা ও যুক্তরাষ্ট্রের শিল্প খাত এই চাহিদা মেটাতে পারবে কি না।
সিএনএনের কাছে আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ২০২৮ সালের এই পরীক্ষা শুধু প্রথম ধাপ হতে পারে।
মে মাসে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, এই প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ২৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করা হয়েছে।
তবে পুরো প্রকল্পের চূড়ান্ত খরচ ১৭৫ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
নর্থরপ গ্রুম্যান মহাকাশভিত্তিক ইন্টারসেপ্টর পরীক্ষা করছে এবং লকহিড মার্টিনের দীর্ঘপাল্লার রাডার (সম্প্রতি আলাস্কায় পরীক্ষা হয়েছে) এই প্রকল্পের অংশ হতে পারে। গেটলাইনকে এই সিস্টেমের নকশা নির্ধারণে ৬০ দিন ও বাস্তবায়ন পরিকল্পনা তৈরিতে ১২০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গোল্ডেন ডোম প্রকল্প পর্যালোচনা শুরু করার পর পেন্টাগনের পরীক্ষা দপ্তরের কার্যক্রম সীমিত করে দিয়েছেন পিট হেগসেথ। এই প্রকল্পে অংশ নেওয়ার প্রতিযোগিতায় রয়েছে স্পেসএক্স, আন্দুরিল ও প্যালান্টির।
সূত্র : এনডিটিভি