img

ভারতে একটি মসজিদের কাছে ২০০৮ সালের প্রাণঘাতী বোমা হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবাদী সন্ন্যাসিনী ও সাবেক সংসদ সদস্য সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরসহ সাতজনকে বৃহস্পতিবার বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।

পশ্চিমাঞ্চলীয় মহারাষ্ট্র রাজ্যের মালেগাঁও শহরের একটি মসজিদের কাছে মোটরসাইকেলে বাঁধা বোমা বিস্ফোরণে ছয়জন নিহত ও ১০০ জনের বেশি আহত হয়েছিল। সেই মামলায় সন্ত্রাসবাদ ও অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে সাতজনের বিচার হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে ছিলেন ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সাবেক সংসদ সদস্য সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুরও।

 

দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি চলছিল।

 

প্রসিকিউশন দাবি করেছিল, হামলায় ব্যবহৃত বিস্ফোরক বহনের জন্য সাধ্বী ঠাকুরের মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়েছিল এবং হামলার আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা সভায় তিনি অংশ নিয়েছিলেন। তবে বিচারক এ কে লাহোটি বৃহস্পতিবার রায়ে বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশন পর্যাপ্ত প্রমাণ উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে। আইন ও ন্যায়বিষয়ক ভারতীয় ওয়েবসাইট লাইভ ল অনুসারে, বিচারক বলেছেন, ‘নৈতিকতা বা জনমতের ভিত্তিতে রায় দেওয়া যায় না।’

 

এ ছাড়া আসামি পক্ষের আইনজীবী রঞ্জিত নায়ার বলেন, বিচারক রায়ে উল্লেখ করেছেন, প্রসিকিউশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি।

অন্যদিকে দেশটির সংসদ সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েইসি এই রায়কে ‘হতাশাজনক’ বলে অভিহিত করে বলেছেন, নিহতদের ‘ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল’। তিনি এক্সে দেওয়া এক পোস্টে আরো বলেন, ‘ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্বল তদন্ত ও প্রসিকিউশন এই খালাসের জন্য দায়ী।’

বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারত হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ইসলাম সংখ্যালঘু ধর্ম।

 

স্থানীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুসারে, বিচার চলাকালে ভারতের সন্ত্রাস দমন ইউনিট জানিয়েছে, ২০০৮ সালের ওই বোমা হামলার উদ্দেশ্য ছিল সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা উসকে দেওয়া।

 

৫৫ বছর বয়সী ঠাকুর ৯ বছর কারাগারে ছিলেন। তারপর ২০১৭ সালে তাকে জামিন দেওয়া হয়। পরে বিজেপি তাকে ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় ভোপাল আসন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী করে এবং তিনি জয়ী হন। ভারতের নির্বাচন আইনে বলা হয়েছে, কেউ যদি দণ্ডিত না হয়ে থাকে, তাহলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।

 

 

এ ছাড়া ঠাকুর একবার বিতর্ক সৃষ্টি করেন, যখন তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক মহাত্মা গান্ধীর উগ্র হিন্দু হত্যাকারীকে ‘দেশপ্রেমিক’ বলে আখ্যা দেন, যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পর্যন্ত তাকে ভর্ৎসনা করেন। তিনি আরো বিতর্কে পড়েন গরুর প্রস্রাব পান করে নিজের ক্যানসার নিরাময় হয়েছে দাবি করে এবং দুধ, মাখন ও গোবর মিশিয়ে তৈরি পানীয়ের উপকারিতা নিয়ে মন্তব্য করে।

এই বিভাগের আরও খবর