ভুল কাস্টিংয়ে একজন শিল্পীকে ডেকে অসম্মানিত করা হচ্ছে : শশী

দুই দশকের ক্যারিয়ারে অসংখ্য নাটক ও টেলিফিল্মে অভিনয় করেছেন লাক্স তারকা শারমিন জোহা শশী। জহির রায়হানের কালজয়ী উপন্যাস ‘হাজার বছর ধরে’র নায়িকা টুনি চরিত্রে অভিনয় করে সিনেমায় দর্শকনন্দিত হন এবং পুরস্কারও লাভ করেন তিনি।
শহরের আধুনিক মেয়ে কিংবা প্রেম-ভালোবাসার গল্পে নিজেকে আটকে রাখেননি। নিজেকে মেলে ধরার চেষ্টা করেছেন নানামাত্রিক চরিত্রে।
তবে বর্তমান সময়ে তাকে যে ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয় তাতে তিনি মোটেও খুশি নন, সে কথা স্পষ্ট হয়েছে তার এক সাম্প্রতিক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে। দীর্ঘ সেই স্ট্যাটাসে শশী রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
‘ভুলভাল কাস্টিং’ শিরোনাম দিয়ে শুরু করা স্ট্যাটাসের শুরুতেই শশী লিখেছেন, ‘আমি একটু আমার ইন্ডাস্ট্রি এবং সহকর্মী ভাই-বোনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি! অনুগ্রহ করে আমাকে ভুলভাল কাস্টিংয়ের জন্য নক করা বন্ধ করুন, কোথাও একটা আমার নাম শুনে বা কোনো ছবি দেখে আমাকে কাস্টিং করে ফেলবেন না!’
এরপর তিনি লিখেন, ‘‘দেখতে দেখতে ‘হাজার বছর ধরে’র ২০ বছর পূর্তি হয়ে গেল (আবার এটা বইলেন না ‘হাজার বছর ধরে’ কী জিনিস) অল্প কিছুদিন আগে। গত ২০ বছরে আমি নাটক, শর্টফিল্ম, বিজ্ঞাপন এবং ডাবিং এও কাজ করেছি।
অনেকে মনে রাখে, আমি অবশ্য বলতে পারব না আমার নাটকের সংখ্যা কত এই ২০ বছরে! আজকে অবশ্যই নিজের ঢোলটা পিটাতে আসিনি, গুরুত্বপূর্ণ কিছু বলতে এসেছি যা আপনাদেরই কাজে আসবে!”
এরপর কাস্টিং প্রসঙ্গ তুলে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমাকে কাস্টিং করার আগে একটু জেনে নেবেন আমি কে? কেন আমাকে কাস্টিং করছেন? কোন চরিত্রে করছেন? বিগত বছরে আমি ঠিক কী ধরনের কাজ করেছি? এবং সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কী ধরনের চরিত্রে কাজ করেছি? আর একটা জিনিস রিসেন্টলি আমার স্ক্রিন প্রেজেন্স কম বা নাই বললে চলে বলে আপনি সুযোগ করে দিচ্ছেন বা আমি নতুন করে আবার নায়িকা হবো—এসব আবোলতাবোল কথা তো অবশ্যই ভাববেন না!’
আগের মতো পর্দায় না দেখা যাওয়ার কারণ উল্লেখ করে শশী লিখেছেন, ‘স্ক্রিন প্রেজেন্স না থাকার কারণটাও আপনারা। আমি বিগত বছরে বারবার আমার ইন্টারভিউগুলোতে বলে আসছি আমি কী ধরনের চরিত্রে কাজ করতে চাই, কেমন গল্প হলে কাজটা করব বা গোটা টিমটাও আমার জন্য আরামের হতে হবে। আপনারা কিছুই দেখেন না, কোনো শিল্পীকে কাস্টিং করবার আগে যে একটাবার তার ব্যাপারে একটু হলেও জানা প্রয়োজন, এটার প্রয়োজনবোধও আপনারা করেন না। কনফিডেন্টলি ভুল মানুষকে ভুল কাস্টিং-এর জন্য ফোন বা টেক্সট করে বসেন! আর আমি না করে যাচ্ছি!’
এরপর তিনি লিখেন, ‘আমি আপনাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার আপনাদের যেমন মন খারাপ হচ্ছে, একটি ভুল স্ক্রিপ্ট পড়ে আমারও সময় নষ্ট হচ্ছে, সব চেয়ে ননসেন্স মার্কা ব্যাপারটা হলো একটি ভুল কাস্টিংয়ে একজন শিল্পীকে নক করে তাকে ভীষণভাবে অসম্মানিত করছেন, তাও আবার কনফিডেন্টলি! একটু গুগল করে নিতে পারেন না!’
সর্বশেষে বর্তমান প্রজন্মের নির্মাতাদের উদ্দেশে একটি উপদেশ দিয়ে তিনি লেখেন, ‘সম্মানটা অর্জন করতে হয় ব্যক্তির নিজেকেই, এটা আমারই রেসপনসিবিলিটি।
তা আমি অর্জন করতে না পারলে আমাকে সম্মান করবেন না, কিন্তু অসম্মান না করাটা আপনাদের হাতে! আর শিল্পীকে তো নয়ই, এতে আপনাদের অজ্ঞতাই আমার কাছে প্রমাণ পাবে। অজ্ঞ হবেন না, যোগ্য হন, যোগ্য শিল্পীকে যোগ্য কাজটি দিন। তা না হলে শিল্পীর মুখে ‘না’ শুনে গসিপ করেই দিন পার হয়ে যাবে।’