হামাসকে ‘আদেশ’ নিয়ে ট্রাম্পের অভিযোগ অস্বীকার ইরানের

গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে চলমান আলোচনায় তেহরান হস্তক্ষেপ করেনি বলে ইরান মঙ্গলবার জানিয়েছে। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসকে তেহরান ‘আদেশ’ দিয়েছে।
স্কটল্যান্ড সফরের সময় সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প বলেন, ইরানিরা ‘এই সাম্প্রতিক আলোচনায় হস্তক্ষেপ করেছে’। অন্যদিকে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে শেষ দফার আলোচনা কোনো অগ্রগতি ছাড়াই গত সপ্তাহে শেষ হয়।
বিস্তারিত কোনো ব্যাখ্যা না দিয়ে ট্রাম্প আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, তারা এই আলোচনায় যুক্ত হয়েছিল, হামাসকে সংকেত ও নির্দেশ দিচ্ছিল এবং এটা ভালো কিছু নয়।’
হামাসের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও পৃষ্ঠপোষক ইরান ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই ট্রাম্পের অভিযোগকে ‘দায় এড়ানোর ও দায় চাপানোর একধরনের কৌশল’ বলে অভিহিত করেছেন।
বাকাই বলেন, হামাসের আলোচকদের ‘তৃতীয় কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন নেই’।
কারণ এই দল ‘গাজার নিপীড়িত জনগণের স্বার্থকে সবচেয়ে উপযুক্ত উপায়ে চেনে ও অনুসরণ করে’।
যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় এ মাসের শুরুতে দোহায় পরোক্ষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে কোনো যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়নি। ইসরায়েল ও হামাস—উভয়ই প্রায় ২২ মাস ধরে চলা যুদ্ধ অবসানের লক্ষ্যে মূল কিছু বিষয়ে আপস করতে ব্যর্থ হওয়ার জন্য একে অপরকে দায়ী করছে।
গত মাসে ইসরায়েল হঠাৎ করে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের ওপর আক্রমণ চালায়।
দেশটির গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়। পাশাপাশি আবাসিক এলাকাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুক্তরাষ্ট্রও স্বল্প সময়ের জন্য সেই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। জবাবে তেহরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার মাধ্যমে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়।
ট্রাম্প সোমবার জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর থেকে ইরান ‘খুবই খারাপ বার্তা’ পাঠাচ্ছে।
তবে তিনি সেগুলো কিসের প্রেক্ষিতে বলেছেন, তা স্পষ্ট করেননি। সম্ভবত তিনি ওয়াশিংটনের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা ব্যাহত হওয়া কিংবা ইরানের আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থনের বিষয়টি ইঙ্গিত করেছেন, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের মতে নিরাপত্তা হুমকি।
বাকাই পাল্টা অভিযোগ করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ‘দখলদার শাসনের কাছে প্রাণঘাতী অস্ত্র পাঠানো বন্ধ করা’ এবং তাদের ‘গণহত্যা বন্ধ করতে ও গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে অনুমতি দিতে বাধ্য করা’।