স্বৈরশাসন পতনের বর্ষপূর্তির আগেই নির্বাচন সিরিয়ায়

সিরিয়ার দীর্ঘ সময়ের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের বছর না পেরোতেই রবিবার অন্তর্বর্তীকালীন সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে দেশটি। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের ১৫ থেকে ২০ তারিখে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। মূলত আইনসভা চালু করতেই ভোট আয়োজন করছে দেশটির সরকার।
প্রায় ১৪ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর গত বছরের ডিসেম্বরে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতন হয়।
আহমেদ আল আল-শারার নেতৃত্বে সিরিয়ার নতুন সরকার দেশের রাবার-স্ট্যাম্প আইনসভা ভেঙে দেয়। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন আল-শারা। সিরিয়ার সংস্কার ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনে পাঁচ বছর অন্তর্বর্তী সরকার পরিচালনার ঘোষণা দেন তিনি।
ঘোষণা অনুসারে, স্থানীয় নির্বাচনী সংস্থাগুলো দুই-তৃতীয়াংশ আইন প্রণেতাদের নির্বাচন করবে ও বাকিদের নাম ঘোষণা করবেন দেশটির অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা।
এর আগে গত জুনে, প্রেসিডেন্টের এক আদেশে ১০ সদস্যের একটি নির্বাচনী কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিই নতুন আইন প্রণেতাদের নির্বাচন পরিচালনা করবে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা রবিবার জানিয়েছে, সম্প্রতি কমিটির প্রধান মোহাম্মদ তাহা আল-আহমাদ নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে প্রেসিডেন্ট শারার সঙ্গে দেখা করেন। সেখানে অন্তর্বর্তী সরকারের আইনসভার জন্য নতুন ২১০ জন আইনপ্রণেতা রাখার পরিকল্পনা করা হয়।
এর মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনী সংস্থাগুলো ১৪০ সদস্য নির্বাচন করবে ও বাকি ৭০ জনকে মনোনয়ন দেবেন প্রেসিডেন্ট।
মোহাম্মদ তাহা আল-আহমাদ বলেন, ‘সংসদ সদস্যদের নির্বাচন ১৫ থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই প্রক্রিয়ায় নারীদের প্রতিনিধিত্বও নিশ্চিত করা হবে।’
প্রেসিডেন্টের এক বিবৃতি অনুসারে, এক বৈঠকে শনিবার আহমদের কমিটি শারাকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পরিকল্পনা উপস্থাপন করেছে।
আহমেদকে উদ্ধৃত করে সানা আরো জানিয়েছে, ‘অস্থায়ী ব্যবস্থা নির্ধারণের ডিক্রি স্বাক্ষরের প্রায় তিন সপ্তাহের মধ্যে স্থানীয় নির্বাচনী সংস্থাগুলো গঠিত হবে।’
এরপরই প্রার্থিতা প্রকাশ করা হবে। নির্বাচনী বিতর্ক অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে প্রার্থীদের তাদের প্ল্যাটফরম প্রস্তুত করার জন্য প্রায় এক সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে।
মার্চ মাসে গৃহীত সাংবিধানিক ঘোষণা অনুসারে, এই পরিষদের ৩৬ মাসের জন্য নবায়নযোগ্য ম্যান্ডেট থাকবে। ঘোষণাপত্রে বলা হয়েছে, স্থায়ী সংবিধান গৃহীত না হওয়া ও নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত সংসদ আইন প্রণয়নের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে। তবে এটি প্রথম ঘোষণা করার পর সমালোচকরা সতর্ক করেছিলেন, এটি শারার হাতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেছে এবং দেশের জাতিগত ও ধর্মীয় বৈচিত্র্য প্রতিফলিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।
পর্যায়ক্রমে সংঘটিত সহিংসতায় সরকারি বাহিনী ও তাদের মিত্রদের জড়িত থাকা এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ব্যাপারে শারার কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা বারবার প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।
সূত্র : এএফপি