img

কাতানা তলোয়ার দিয়ে স্বামীকে আঘাত করেছেন ৫০টিরও বেশি। তাকে হত্যা করে এরপর সেই তলোয়ার আবার খাপে রেখে স্ট্যান্ডে সাজিয়ে রেখেছিলেন স্ত্রী। এমন ভয়াবহ বিবরণ সামনে এসেছে ব্রিটেনের লিউইস ক্রাউন আদালতে।

৭১ বছর বয়সী স্ত্রী জোয়ানা রোল্যান্ড-স্টুয়ার্ট স্বামী অ্যান্ড্রু রোল্যান্ড-স্টুয়ার্টকে (৭০) এভাবেই হত্যা করেন।

 

এ ঘটনার পরে গত বছরের ২৭ মে ব্রাইটনের ল্যাভেন্ডার স্ট্রিটে নিজ বাড়ি থেকে স্ত্রী জোয়ানা রোল্যান্ড-স্টুয়ার্টকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুরুতে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

 

আদালতে বলা হয়, জোয়ানা জানান তিনি আত্মরক্ষার্থে এ কাজ করেছেন। তবে প্রসিকিউশন দাবি করেছে, অ্যান্ড্রুর শরীরে যে ধরনের এবং যেসংখ্যক আঘাত করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই আত্মরক্ষার যুক্তিসঙ্গত সীমায় পড়ে না।

 

২০০১ সালে পরিচয় ও ২০০৬ সালে সিভিল পার্টনারশিপে আবদ্ধ হন এই দম্পতি। তারা ব্রাইটনের একটি বহুতল ভবনের ১৫ তলায় বসবাস করতেন।

 

প্রতিবেশীরা পুলিশকে বলেন, এই দম্পতি স্বাভাবিক ছিলেন এবং তাদের ফ্ল্যাট থেকে কখনো উচ্চৈঃস্বরে ঝগড়াঝাঁটির শব্দ পাওয়া যায়নি। 

 

৭১ বছর বয়সী স্ত্রী জোয়ানা রোল্যান্ড-স্টুয়ার্ট

প্রসিকিউশনের আইনজীবী চার্লট নিউয়েল কেসি জানান, হত্যাকাণ্ডের দিন সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটের কিছু পর জোয়ানাকে ফ্ল্যাটের দরজার ক্যামেরায় অন্তর্বাস পরা রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়।

 

তিনি দুই প্রতিবেশীর দরজায় নক করে চিৎকার করে বলেন, ‘অ্যান্ডি মারা গেছে।’

 

৯৯৯-এ ফোন করে জোয়ানা বলেন, ‘আমার স্বামী অ্যান্ড্রু আমাকে কাতানা তলোয়ার দিয়ে মারতে চেয়েছিল, ধস্তাধস্তির মধ্যে আমি তলোয়ারটা ঘুরিয়ে দিই, ও তাতে পড়ে যায়।’  পুলিশ ফ্ল্যাটে গিয়ে দেয়াল, ক্যাবিনেট, সোফা ও বাথরুমে রক্ত দেখতে পায়। 

আদালতে জানানো হয়, অ্যান্ড্রুর হাত, বাহু, পিঠ, মাথার পেছনসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাত ছিল। এসবের প্রায় সবই কাতানা দিয়ে করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

তার শরীরের একটি আঘাত সম্ভবত একটি ছোট ছুরি দিয়ে করা হয়েছে। তলোয়ারটি ঘটনার পর খাপে রেখে স্ট্যান্ডে সাজানো অবস্থায় পাওয়া যায়।

 

আদালত জানিয়েছেন, জোয়ানা রোল্যান্ড-স্টুয়ার্ট মানসিকভাবে অভিযুক্ত হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে অক্ষম। তাই তিনি সরাসরি বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নিচ্ছেন না।

জুরি বোর্ডের এখন কাজ হচ্ছে শুধু এটি নির্ধারণ করা— তিনি স্বামীকে বেআইনিভাবে হত্যা করেছেন কি না? বিচারক ক্রিস্টিন লেইং কেসি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন। মামলার শুনানি এখনো চলমান।

উল্লেখ্য, কাতানা বলতে জাপানি যোদ্ধাদের (সামুরাই) ব্যবহৃত এক প্রকার তলোয়ারকে বোঝায়। এদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত তলোয়ার হলো কাতানা। লম্বা, বাঁকানো, একধারী তলোয়ার এটি। তলোয়ারটি বেশ ধারালো। সামুরাইরা যুদ্ধের সময় ও শান্তিকালীন বিভিন্ন ধরনের তলোয়ার ব্যবহার করত। যার মধ্যে কাতানা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। 

সূত্র : বিবিসি

এই বিভাগের আরও খবর