img

মালয়েশিয়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় জনমনে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম বুধবার দেশের সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে এককালীন নগদ অর্থ সহায়তা ও জ্বালানির দাম কমানোর মতো নতুন কিছু পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছেন। 

টেলিভিশনে প্রচারিত তার এ ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এলো, যখন প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবিতে শনিবার কুয়ালালামপুরে একটি বড় ধরনের বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিক্ষোভকারীরা মূল্যস্ফীতি ও প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়নে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে আনোয়ার সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

 

আনোয়ার সরকার চলতি বছর রাজস্ব ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সর্বনিম্ন মজুরি বৃদ্ধি, অধিক বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের জন্য শুল্ক বৃদ্ধি ও বিক্রয়-পরিষেবা কর সম্প্রসারণ। আনোয়ার দাবি করেছেন, এসব পদক্ষেপ মূলত বড় ব্যবসা ও ধনীদের জন্য নেওয়া হয়েছে। তবে সমালোচকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এ বাড়তি ব্যয় শেষ পর্যন্ত মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষের ওপরই চাপ সৃষ্টি করবে।

 

তবে বুধবারের ঘোষণায় আনোয়ার জানিয়েছেন, ৩১ আগস্ট থেকে ১৮ বছরের বেশি বয়সী প্রত্যেক মালয়েশিয়ার নাগরিক ১০০ রিঙ্গিত (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দুই হাজার ৮৬০ টাকা) করে এককালীন নগদ সহায়তা পাবেন। ২০২৫ সালে নগদ অর্থ সহায়তা বাবদ সরকার ১৫ বিলিয়ন রিঙ্গিত ব্যয় করবে, যা পূর্বে নির্ধারিত ১৩ বিলিয়ন রিঙ্গিতের চেয়ে বেশি।

এদিকে দেশটির পুলিশ জানিয়েছে, ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষ শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নিতে পারে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো এ বিক্ষোভটির আয়োজন করছে।

 

আনোয়ার বলেছেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার পরেও জীবনযাত্রার ব্যয় এখনো একটি বড় সমস্যা, আমি জনগণের এ অভিযোগ স্বীকার করছি ও মেনে নিচ্ছি।’ দারিদ্র্যপীড়িত জনগণের জন্য বৃহস্পতিবার আরো সহায়তা পরিকল্পনা ঘোষণা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। 

এ ছাড়া তিনি জানান, বহুল ব্যবহৃত আরওএন৯৫ পরিবহন জ্বালানিতে সর্বাত্মক ভর্তুকি সংস্কারের প্রতীক্ষিত পরিকল্পনার বিস্তারিত আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করবে সরকার। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে প্রতি লিটার আরওএন৯৫ এর দাম ২.০৫ রিঙ্গিত থেকে কমে ১.৯৯ রিঙ্গিতে আসবে। তবে বিদেশি নাগরিকদের জন্য এ ভর্তুকি প্রযোজ্য হবে না।

 

কেনঙ্গা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন সাপুয়ান বলেছেন, ‘চলমান বৈশ্বিক অনিশ্চয়তার কারণে এ প্রতিকূলতার মধ্যে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণে নগদ অর্থ বিতরণ ও ভর্তুকি ব্যবস্থাগুলো প্রয়োজনীয় ছিল। তবে এ পরিকল্পনা সরকারকে রাজস্ব লক্ষ্যপূরণে চাপে ফেলতে পারে।’

ফিচ রেটিংস সোভেরিনস টিমের ক্যাথলিন চেন বলেছেন, ‘ভর্তুকিতে আরো বিলম্ব বা অপর্যাপ্ত অগ্রগতি সরকারের ২০২৮ সালের মধ্যে ঘাটতি ৩ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যকে বিপন্ন করতে পারে। ফিচ আশা করছে, মালয়েশিয়ার সাধারণ সরকারি ঋণ ২০২৫ সালে জিডিপির প্রায় ৭৬.৫ শতাংশের মতো থাকবে।’

সূত্র : রয়টার্স

এই বিভাগের আরও খবর