জরুরি অবস্থা ঘোষণায় লাগবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন, একমত রাজনৈতিক দলগুলো

রাজনৈতিক স্বার্থে আর জরুরি অবস্থা জারি বা ব্যবহার না করার লক্ষ্যে নতুন বিধান সংযোজনের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে রাজনৈতিক দলগুলো। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জরুরি অবস্থা ঘোষণার জন্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন লাগবে।
রবিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের সংলাপের দ্বাদশ দিনে এই ঐকমত্যে পৌঁছায় দলগুলো।
আজকের বৈঠক শেষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, ‘জরুরি অবস্থা জারি করতে মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিরোধীদলীয় নেতা বা উপনেতার মতামত নিতে হবে।
এরপর অধ্যাদেশ জারি করবেন রাষ্ট্রপতি। এ বিষয়ে বেশির ভাগ দলই একমত হয়েছে।’
আবার এই আইনের অপব্যবহার হলেও প্রতিবাদ করতে পারবেন বিরোধীদলীয় নেতা। নাগরিকদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘আর যদি তখন সংসদ কার্যকর না থাকে, তাহলে সর্বশেষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে গঠিত সংসদের সরকার ও প্রধান বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। অর্থাৎ সবার সম্মিলিত সিদ্ধান্ত থাকতে হবে।’
বরাবরের মতো আজকেও আলোচনায় সভাপতিত্ব করছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
সংলাপ শুরু হওয়ার আগে সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলেন, ‘যেহেতু আপনারা রাজনৈতিক দল করেন, সেহেতু সব বিষয়ে আপনাদের একটি নির্দিষ্ট অবস্থান থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনাদের প্রতি অনুরোধ, একটি মাঝামাঝি স্থানে এসে আমাদের দাঁড়াতে হবে। পরবর্তীতে যদি জনগণের কাছ থেকে আপনারা প্রতিনিধিত্ব লাভ করতে পারেন, তাহলে সেটি পরিবর্তন করতে পারেন এবং সেটি জনগণের রায়ের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। কিন্তু কমিশন মনে করছে, একটি পর্যায়ে আসা ভালো।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আপনাদের বক্তব্যকে গুরুত্বহীন মনে করছি না, বরং আমরা চাচ্ছি সবাই একটি ঐকমত্যে পৌঁছাক।
চাইলেই এ আলোচনা বাদ দেওয়া যেতে পারে, কিন্তু তাতে বিদ্যমান পরিস্থিতিই থেকে যাবে। আমাদের একটি জায়গায় আসতে হবে—এই বিবেচনাটা যদি আপনারা করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে ঐকমত্য গঠন করা সম্ভব।’